ঢাকা, ১৪ মে ২০২৫: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় প্রশাসন তৎপর হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ, এলজিইডি মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক বৈঠকে উদ্যানের নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো: ঢাবির টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ থাকবে, বৃহস্পতিবার থেকে উদ্যানে তল্লাশি অভিযান শুরু হবে, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে রমনা পার্কের মতো স্থায়ী উন্নয়নের জন্য একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হবে, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আলোর ব্যবস্থা করা হবে, ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে, এবং উদ্যানকে নিরাপদ পার্ক হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। জানা গেছে, মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সাম্যর মোটরসাইকেলের সাথে আরেকটি মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তাল হয়। ছাত্রদল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। বুধবার সকালে রাজু ভাস্কর্যের সামনে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে হত্যার বিচার ও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে।
বুধবার জোহরের নামাজের পর ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে সাম্যর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় উপাচার্য, ছাত্রদল নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাম্যর মরদেহ সিরাজগঞ্জে তার নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গ্রেফতার তিনজনকে বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামসেদ আলমের আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠান।
সাম্যর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৃহস্পতিবার (১৫ মে) একদিনের শোক ঘোষণা করেছে এবং দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
এ.আই/এম.আর