ঢাকা, ৪ মে ২০২৫ – বাংলাদেশ গত এপ্রিল ২০২৫-এ ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স আহরণ করেছে, যা দেশের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই পরিমাণ দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে), যার দৈনিক গড় ৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। ঈদের পরেও রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের অর্থনীতিতে অব্যাহত অবদানকে তুলে ধরে।
একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২৫ সালের মার্চে, ৩২৯ কোটি ডলার। এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ। এপ্রিলের এই পরিসংখ্যান রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারাকে প্রতিফলিত করে, যা সরকারের হুন্ডির মতো অবৈধ অর্থ স্থানান্তর চ্যানেলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ফল। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, “বর্তমান সরকারের অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে অবৈধ চ্যানেলে লেনদেন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।”
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫) প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৩ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে এই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৯১২ কোটি ডলার। এই বৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশের মোট রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ ৪৮.০৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে, ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করেছে। বর্তমানে মোট রিজার্ভ ২৭.৪১ বিলিয়ন ডলার, এবং প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২২.০৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, রেমিট্যান্সের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করছে। এটি বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে এবং ঋণ পরিশোধের বোঝা কমাতে সহায়তা করছে, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্বস্তি এনে দিচ্ছে।
এই ধারাবাহিক রেমিট্যান্স প্রবাহ আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজ
ার্ভ আরও বাড়াতে, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য বৃদ্ধি করতে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা জোরদার করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়।
এ আই/ এম.আর