Tuesday, May 6, 2025

ভারতের পানি কেবল ভারতের স্বার্থেই ব্যবহার হবে: মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৬ মে, ২০২৫ : জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে কয়েক দশকের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে মোদি জোর দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানে পানি সরবরাহ বন্ধের এই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না এবং ভারতের পানি এখন শুধুমাত্র ভারতের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে।

গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ ভারতীয় এবং এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিকে ভারতের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ভারতের বিজেপি সরকার দাবি করেছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা এবং ‘ডিপ স্টেট’-এর সরাসরি মদত রয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল, ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, স্থল সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধসহ কঠোর পদক্ষেপ নেয়। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি স্থগিত এবং সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করেছে। ইসলামাবাদ সতর্ক করে বলেছে, সিন্ধু নদের পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ সমতুল্য হবে।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে মোদি বলেন, “আজকাল গণমাধ্যমে পানি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আগে ভারতের অধিকারে থাকা পানিও দেশের বাইরে চলে যেত। এখন ভারতের পানি শুধু ভারতের উপকারে প্রবাহিত হবে, ভারতের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত হবে এবং ভারতের উন্নতির জন্য ব্যবহৃত হবে।”
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু ও এর উপনদীগুলোর পানি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ করা হয়। পাকিস্তান তার প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষিজমির সেচের জন্য এই পানির ওপর নির্ভর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ভারত পানি প্রবাহে বাধা দিতে অতিরিক্ত জলাধার নির্মাণ করতে পারত না। কিন্তু চুক্তি স্থগিত হওয়ায় ভারত নতুন বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ শুরু করেছে, যা পাকিস্তানের কৃষি ও অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ফোরামে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, দাবি করে যে চুক্তির একতরফা স্থগিতকরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য স্থগিত, সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা এবং পারস্পরিক কঠোর পদক্ষেপের কারণে সম্পর্ক এখন তলানিতে ঠেকেছে, এবং আরও সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।
এ.আই/এম.আর


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.