ঢাকা, ৯ মে ২০২৫ :রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ফারিয়া হক টিনাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে টিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রদের মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, পারভেজ ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। তাদের পাশে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী এবং ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্ররা ছিলেন। একপর্যায়ে দুই ছাত্রী অভিযোগ করেন যে পারভেজ তাদের উত্যক্ত করেছেন এবং বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানান।
প্রক্টরের কার্যালয়ে পারভেজ দাবি করেন, তিনি বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা করছিলেন এবং কাউকে উত্ত্যক্ত করেননি। তাকে দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলে তিনি ক্ষমাও চান। কিন্তু এরপরও ইংরেজি বিভাগের ছাত্ররা পারভেজকে হুমকি দেন। প্রক্টরের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর কিছু বহিরাগত এসে পারভেজের উপর হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বুকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পারভেজকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তার আগেই মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীরের দায়ের করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ২৫-৩০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন— মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)।
এর আগে, ২৩ এপ্রিল গাইবান্ধা থেকে প্রধান আসামি মেহরাজ এবং ২১ এপ্রিল কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয় মিয়াজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহাথির হাসান ও মো. আল কামাল শেখ নামে দুজন গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানি নামে দুজন গ্রেপ্তারের পর রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
ফারিয়া হক টিনার গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এ মামলায় মোট সাতজন গ্রেপ্তার হলেন। গত ২৩ এপ্রিল আদালত এ মামলায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার একজন টিনা। তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনার পেছনের বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ।
এ.আই/এম.আর