আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৭ মে ২০২৫ : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দাবি করেছেন, ভারতের সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে যে হামলা চালিয়েছে, তার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছে তার দেশ।
বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এই ঘটনা দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
শেহবাজ অভিযোগ করেন, ভারত রাতের আঁধারে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বড় ধরনের নাশকতার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, “অতীতের মতো এবারও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কৃপায় এবং জাতির সমর্থন ও দোয়ায় আমাদের সামরিক বাহিনী এই হামলার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের এই দৃঢ় প্রতিক্রিয়া শত্রুপক্ষকে বিশৃঙ্খল করে দিয়েছে এবং একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে পাকিস্তানের শক্তি, শৌর্য ও সামর্থ্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যা শত্রুর চোখ থেকে ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার পর বুধবার ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারত এই অভিযানের নাম দেয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। মাত্র ২৫ মিনিটের এই অভিযানে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরের ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়। ভারত দাবি করেছে, এতে ৭০ জন নিহত হয়েছেন, যদিও পাকিস্তানের দাবি, হামলায় ২৬ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।
এছাড়া, নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে, যার ফলে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মিরে তিনটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শেহবাজ বলেন, পাকিস্তানের বিমান বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুতর বিঘ্ন ঘটিয়ে তাদের শ্রীনগর থেকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, “আমরা আরও বেশি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করতে পারতাম।”
শেহবাজ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর এই সাহসিকতা ও বিজয়ের কৃতিত্ব পুরো জাতির বলে উল্লেখ করেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। এই সংঘাত গত দুই দশকের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সহিংসতার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা আরও উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
এ.আই/এম.আর