Friday, April 11, 2025

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আরও ১৬৭ বাংলাদেশি: প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টার সফলতা ও করণীয়


উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার কঠিন পরিস্থিতিতে আটকেপড়া আরও ১৬৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোর ৫টায় বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটের মাধ্যমে। এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) মিলে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এই প্রত্যাবাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ফিরিয়ে আনা ব্যক্তিদের মধ্যে লিবিয়ার বেনগাজি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে আসা ১৬ জন এবং গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৫১ জন অভিবাসী অন্তর্ভুক্ত। ফিরিয়ে আনা অভিবাসীদের বেশিরভাগই মানবপাচারের শিকার হয়ে লিবিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন এবং নানাবিধ নির্যাতন ও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন।

ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রত্যাবাসিতদের অভ্যর্থনা জানান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এবং IOM-এর কর্মকর্তারা। প্রত্যাবাসনকৃতদের প্রত্যেককে ছয় হাজার টাকা নগদ অর্থ, খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় অভিবাসীদের এবং সাধারণ জনগণকে এ ধরনের বিপদজনক পথে যাত্রা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তাঁরা ভয়ংকর এই অভিজ্ঞতার ভয়াবহতা তুলে ধরে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। মানবপাচারের ফাঁদে পড়ে যেন আর কোনো বাংলাদেশি এমন দুর্ভোগের শিকার না হন, সে বিষয়ে কড়াকড়ি নজরদারির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

লিবিয়ার ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে আটকেপড়া আরও অনেক বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং IOM একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এই অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াই এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।

এই উদ্যোগটি প্রমাণ করে যে সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করলে কীভাবে অভিবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন সম্ভব। তবে এই সফলতা তখনই টেকসই হবে যখন জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানবপাচার রোধ করা যায়।

এ আই/এম.আর


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.