যশোর: ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউসে উঠেছিলেন। এ খবর পেয়ে যশোর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি তার দলবল নিয়ে রেস্ট হাউসে হানা দেন এবং হট্টগোল সৃষ্টি করেন। গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ ও রেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ওসি সাইফুল ইসলাম এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউসের কপোতাক্ষ কক্ষে প্রবেশ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে সেখানে হাজির হন ছাত্রদল নেতা গোলাম হাসান সনি। তারা দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে ওসি সাইফুল বাইরে বেরিয়ে আসেন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এরপর ধস্তাধস্তি ও টানাহেঁচড়ার মধ্যে তারা কক্ষে প্রবেশ করেন।
বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে গোলাম হাসান সনি ও তার সহযোগীরা কক্ষে ভাঙচুর চালান এবং ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তারা একজন আনসার সদস্য ও পাউবোর এক কর্মচারীকে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছাত্রদল নেতা সনি ওসি সাইফুল ও ওই নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন।
রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল এক নারীকে স্ত্রী পরিচয়ে সঙ্গে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন। ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পর স্থানীয় কিছু লোক রেস্ট হাউসে প্রবেশ করে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে সাইফুল দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে লোকজন তাকে ওই নারীসহ কক্ষে ঢুকিয়ে দেন।
পাউবো রেস্ট হাউসের ইনচার্জ উপসহকারী প্রকৌশলী তরুণ হোসেন জানান, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে ওসি সাইফুলকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে থাকা নারীকে তিনি স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তবে অবস্থানকালে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, ঝিনাইদহ পাউবোর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওসিকে কক্ষ দেওয়া হয়েছিল। পরে বহিরাগতরা এই ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে।
ওসি সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি একজন নারী বন্ধুকে নিয়ে যশোরে কাজে এসেছিলেন। রেস্ট হাউসে অবস্থানকালে কয়েকজন ছাত্রনেতা এসেছিলেন, যারা তার পূর্বপরিচিত। তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
অন্যদিকে, গোলাম হাসান সনি দাবি করেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে একজন নারীসহ কারও মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান। তবে কোনো নারীর উপস্থিতি পাননি। সিসিটিভি ফুটেজে তাদের দেখা গেছে বলা হলে তিনি বলেন, এটি সত্য নয়। নারী না পাওয়ায় ওসির সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলে চলে আসেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দল এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী জানান, সনি বর্তমানে ছাত্রদলের পদে নেই, তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ ধরনের অভিযোগ তার জানা নেই। তবে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব রাজেদুর রহমান সাগর বলেন, সনি উভয় দলেই রয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.