by 
বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মনির হোসেনের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি গত মঙ্গলবার রাতে জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে দুই নারীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠেছে। মনির হোসেনকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বনানী থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হলেও এখনো কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, শাড়ি পরা একজন নারী হোটেলের সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামার সময় এক ব্যক্তি তাঁর পথ রোধ করে আঘাত করেন, যার ফলে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। আরেকজন নারীও তাঁর পেছনে দৌড়ে নামার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তাঁকে পেছন থেকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে দেওয়া হয়। ভিডিওতে ৮ থেকে ১০ জন হামলাকারীকে দেখা যায়, যারা দুই নারীর ওপর আক্রমণ চালায়। ভাঙচুরের শব্দ এবং নারীদের চিৎকারও ভিডিওতে শোনা যায়। **পুলিশের বক্তব্য**: বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার *প্রথম আলো*কে বলেন, মনির হোসেনের নেতৃত্বে এই গ্রুপ হোটেলে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। **যুবদলের পদক্ষেপ**: ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর জনরোষের মুখে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে যুবদল মনির হোসেনকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে। এক বিবৃতিতে যুবদল জানায়, বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। নেতা-কর্মীদের মনিরের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। **হোটেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ**: জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিকের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ৩০ জুন রাত ৮টার দিকে মনির নামে এক ব্যক্তি ভিআইপি কেবিন চেয়েছিলেন। কেবিনটি অন্য অতিথির জন্য বরাদ্দ থাকায় তাঁকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি সাধারণ টেবিলে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করে ছাড় দাবি করেন। ছাড় দেওয়া হলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে হুমকি দিয়ে চলে যান। পরদিন, ১ জুলাই রাত ৮:৪০ মিনিটের দিকে মনির ২০-২৫ জনকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকে গ্লাস ছুড়ে ভাঙচুর শুরু করেন। চেয়ার, টেবিল, সিসিটিভি মনিটর, ক্রোকারিজসহ বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর করা হয়। তারা ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৭০,০০০ টাকা এবং প্রায় ৫ লাখ টাকার মদ ও বিয়ার নিয়ে চলে যান। কর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টায় তাঁদের পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলাকারীরা পুলিশকে জানালে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার হুমকি দেয়। ঘটনার পর আহত কর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনার পর বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় মনিরসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ২০-২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব এবং কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার সমালোচনা করছেন।
.webp)
