Friday, July 4, 2025

বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতা আরও বাড়াতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগ, মৎস্য, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা, এবং যুব উন্নয়ন—বিশেষ করে শিক্ষা ও খেলাধুলা ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “জাপান সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। সম্প্রতি আমি জাপান সফর করেছি, এবং সেখানে আমার প্রতিনিধিদল ও আমার প্রতি দেখানো আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে।” তিনি মাতারবাড়ী প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে এটিকে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল’ হিসেবে অভিহিত করেন।

তিনি বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আমরা একটি সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতিতে পরিণত হতে চাই।” তরুণদের জন্য জাপানে শিক্ষার বৃত্তি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “জাপানি ভাষা ও কর্মস্থলের আচরণ শেখাতে জাপানি শিক্ষকেরা এখানে এসে বা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।” রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “হাজার হাজার তরুণ ক্যাম্পে আশাহীনভাবে বেড়ে উঠছে, যা তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করছে।” জাইকার মিয়াজাকি বলেন, “বাংলাদেশ এশিয়ায় জাপানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।” তিনি জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানান, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিতে জাইকা বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারে সহায়তা করছে। এছাড়া, আইসিটি মানবসম্পদ উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যুব উন্নয়ন প্রসঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূস নারীদের খেলাধুলায় সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের মেয়েরা সবখানে জয়লাভ করছে। তাদের স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণে আরও সহায়তা প্রয়োজন।” জবাবে মিয়াজাকি বলেন, জাপান নারীদের খেলাধুলায় আরও সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করবে। প্রধান উপদেষ্টা অর্থনৈতিক সংস্কার, রেলপথ নির্মাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ও অনুদান চুক্তির জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান এবং উন্নয়ন সহায়তার সীমা ৩০০ বিলিয়ন ইয়েন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন ইয়েনে বাড়ানোর অনুরোধ জানান।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.