Tuesday, July 8, 2025

সহায়তার টাকা না পেয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত কয়েকজন বারবার ঘুরেও সহায়তার টাকা না পেয়ে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষে ভাঙচুর করেছেন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশে অবস্থিত এই অফিসে ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে অফিসে তালা লাগানো হয়, পরে ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

আহতদের অভিযোগ, দ্বিতীয় ধাপের সহায়তার টাকা দেওয়ার কথা বলে তাদের তিন থেকে চারবার ঘোরানো হয়েছে। মঙ্গলবার টাকা দেওয়ার তারিখ ছিল, কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। দুপুরের পর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা অফিসের সামনে ভিড় করেন। তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, মঙ্গলবার টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আহতরা অফিসে তালা লাগান এবং একজন কর্মচারীর খারাপ আচরণের পর ভাঙচুর করেন। ভাঙচুরের পর অফিসে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারগুলো এলোমেলো পড়ে আছে, পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভাঙা হয়েছে, এবং মেঝেতে কাচের টুকরো ছড়িয়ে আছে। আহত মামুন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, “ফাউন্ডেশনের একজন কর্মী আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলায় সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর করি। জুলাই ফাউন্ডেশন আমাদের আহতদের জন্য, কিন্তু বারবার ঘুরিয়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে না।” তিনি জানান, গত বছর আন্দোলনে আহত হওয়ার পর থেকে তিনি চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, “আমার মাথায় গুলি, ১১ মাস ধরে চিকিৎসা চলছে। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী?” আহত নাজমুল হোসেন, সাভার সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, বলেন, “সাত মাস ধরে দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য ঘুরছি। যাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, তাদের আগে টাকা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের, যারা বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না।” জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও কামাল আকবর বলেন, “আহতদের অনেকে মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। তাদের রাগ-ভাঙচুরের একটা প্রেক্ষাপট আছে। আমাদের তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।” দ্বিতীয় ধাপের টাকা না দেওয়ার অভিযোগে তিনি বলেন, “গুরুতর আহতদের প্রথম ধাপে টাকা দেওয়া হয়েছে। ৮০৬ জনকে দ্বিতীয় ধাপে টাকা দেওয়া হয়েছে, বাকিদের ধাপে ধাপে দেওয়া হবে।” তিনি জানান, ফাউন্ডেশনে ৭ কোটি টাকা আছে এবং ৩৯ জন ভুয়া আহত ও চারজন শহীদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আলোচনার পর রোববার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.