মুরাদনগরে ধর্ষণ: ১২ দিন পর নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা, ৪ আসামি কারাগারে
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার এক নারীর (২৫) ডাক্তারি পরীক্ষা (ফরেনসিক) ১২ দিন পর সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি স্বেচ্ছায় পরীক্ষা করান। এদিকে, নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় মামলার চার আসামিকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।গত ২৬ জুন রাতে ওই নারী নির্যাতনের শিকার হন। ২৭ জুন তিনি মুরাদনগর থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। পরদিন ২৮ জুন তাঁকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও তিনি পরীক্ষা করাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে পুলিশ তাঁকে মুরাদনগরে ফিরিয়ে আনে। মঙ্গলবার তিনি স্বেচ্ছায় পরীক্ষা করান। ানার উপপরিদর্শক রুহুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, “আইন অনুযায়ী ভুক্তভোগী পরীক্ষা করাতে না চাইলে তাঁকে বাধ্য করা যায় না। তিনি এখন বাবার বাড়িতে নেই, নিজের হেফাজতে অন্যত্র থাকলেও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি পরীক্ষার গুরুত্ব বুঝে স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছেন। এটি মামলার তদন্তে ইতিবাচক।” **চার আসামি কারাগারে** নির্যাতন ও ভিডিও ছড়ানোর মামলায় চার আসামি—মোহাম্মদ আলী ওরফে সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক—তিন দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের মধ্যে সুমন ও রমজান পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তারা আদালতে স্বীকারোক্তি দেবেন। কিন্তু আদালতে তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মোহাম্মদ আলী ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ওয়ার্ড কমিটির সাবেক নেতা। তদন্তকারী কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সুমন ও রমজান স্বীকারোক্তি দেওয়ার কথা বললেও আদালতে তা দেননি।” **প্রধান আসামি চিকিৎসাধীন** ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সময় স্থানীয় যুবকরা তাঁর হাত-পা ভেঙে দেন। ২৯ জুন ভোরে তাঁকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুহুল আমীন জানান, ফজর আলীর অবস্থা উন্নতির দিকে নয়, অস্ত্রোপচার প্রয়োজন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে দুই মাস লাগতে পারে। **ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ** ভিডিও ছড়ানোর ‘নেপথ্যের ব্যক্তি’ শাহ পরানের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তিনি ফজর আলীর ছোট ভাই। গত বৃহস্পতিবার র্যাব তাঁকে বুড়িচং থেকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার তাঁকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। রোববার রিমান্ডের আবেদন করা হয়, যার শুনানি বুধবার হবে। ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ২৬ জুন রাতে ফজর আলী সুদের টাকার খোঁজে ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে টিনের দরজা ভেঙে তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে স্থানীয় যুবকরা তাঁকে ও ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র করে মারধর করেন এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ান। এ ঘটনায় ২৭ জুন ধর্ষণ এবং ২৯ জুন ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।