ঢাকা, ৮ জুলাই ২০২৫ - বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প, গুরুতর সংকটের মুখে পড়েছে। নতুন শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে, যা পূর্বঘোষিত ৰোৰ থেকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ট্রাম্প এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর আগে গত এপ্রিলে জারি করা নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছিল, নতুন শুল্ক পূর্বের শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত হিসেবে প্রযোজ্য হবে। ফলে, বাংলাদেশি পণ্যের উপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে নতুন ৩৫ শতাংশ যোগ হয়ে মোট শুল্ক হার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। তৈরি পোশাকে এই হার ৫১ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, এমনকি কিছু পণ্যে ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “এই শুল্ক কার্যকর হলে রপ্তানি খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেসব কারখানা যুক্তরাষ্ট্রের উপর ৫০ শতাংশের বেশি নির্ভরশীল, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “ব্যবসায়ীরা অন্ধকারে রয়েছেন। শুল্ক নিয়ে আলোচনার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি, শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বর্তমানে এ বিষয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ২.২২ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬.৬৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে মোট রপ্তানি আয় ছিল ৮.৩৬ বিলিয়ন ডলার।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “নতুন শুল্কের ফলে অনেক শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে শিল্প খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনার পরামর্শ দেন।