দেশে অর্থনীতির কঠিন করুণ অবস্থা, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা মানুষের মনে: রিজভী
ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫: দেশের অর্থনীতির কঠিন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “এটা শুধু মুখের কথা নয়, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে। দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই, তাহলে জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।” শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. আব্দুল কুদ্দুসের রোগমুক্তি কামনায় দুস্থদের মধ্যে জায়নামাজ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “আমরা মানবিক সাম্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি, যার জন্য প্রয়োজন খাঁটি গণতন্ত্র। এটা বৃহত্তর আদর্শের লড়াই, যেখানে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেই মালিকানা আটকে রাখা ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া।” তিনি বলেন, জনগণের সরকার থাকলে প্রতিটি পদক্ষেপে জবাবদিহি করতে হয়, যা এখন নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনসমর্থিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ও তাদের কয়েকটি দোসর ছাড়া সবাই এই সরকারকে সমর্থন করেছে। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন করছি। কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত দেখা গেলে জনগণ আমাদের ছাড়বে না।” অসংখ্য গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাওয়া ও মানুষের কর্মহীনতার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে, তাহলে দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে। এমন হলে কেউ রেহাই পাবে না, আর পতিত ফ্যাসিস্টরা হাততালি দেবে।” তিনি সরকারকে প্রশাসক নিয়োগ করে বন্ধ প্রতিষ্ঠান চালানোর এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “অর্থনীতির কঠিন অবস্থা। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দুর্ভিক্ষ হবে কি না, এটা মানুষের মনে। আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে, নইলে জনগণ কাউকে ছাড়বে না।” সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “বিএনপি সংস্কারের বিরোধী নয়, আমাদের ৩১ দফায় অনেক বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। জুলাই সনদের অনেক বিষয় আমরা গ্রহণ করেছি। কিন্তু সংস্কার গতিশীল, স্থির নয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সংস্কার হবে। জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়াই সবচেয়ে বড় কাজ। ১৬ বছর শেখ হাসিনা জনগণের ক্ষমতার দরজায় খিল দিয়েছিলেন। এখন সেই দরজা খুলতে হবে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহহিল মাছুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, জিয়া পরিষদ ডেসকো শাখার সদস্য সচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল প্রমুখ।