Saturday, July 26, 2025

টাঙ্গাইলে টনসিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুর মৃত্যু, পালিয়েছে চিকিৎসক-নার্স

টাঙ্গাইলের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে টনসিল অস্ত্রোপচারের পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। নিহত শিশু তাসরিফা আক্তার (৯) দেলদুয়ার উপজেলার পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ মিয়ার মেয়ে। নিহতের বাবা পারভেজ মিয়া জানান, তিনি ঢাকার রপ্তানি এলাকার একটি কারখানায় মেকানিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, “শুক্রবার সকালে আমি আমার স্ত্রী পলি আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে তাসরিফার টনসিলের চিকিৎসার জন্য মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাকে টনসিল অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি করেন। বিকেলে তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। নাক-কান-গলার চিকিৎসক ডা. মাসুম বিল্লাহ তাসরিফার অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারের পর তাকে অচেতন অবস্থায় শয্যায় নেওয়া হয়।” পারভেজের মতে, চিকিৎসক প্রথমে জানান, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তাসরিফার হাত-পা ছটফট করতে শুরু করে। পারভেজ নার্স ও চিকিৎসকদের ডাকতে থাকেন। একজন নার্স এসে বলেন, টনসিল অপারেশনের রোগীরা এমন হাত-পা ছটফট করে। কিছুক্ষণ পর তাসরিফার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে নিথর হয়ে পড়ে। পরে চিকিৎসকরা তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান। কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। এরপর পারভেজ ও তার স্ত্রী পলি বেগম মৃত শিশুকে নিয়ে ক্লিনিকে ফিরে এসে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। তখন অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ, নার্স ও ক্লিনিকের মালিকপক্ষ সেখান থেকে পালিয়ে যান। অভিযোগের বিষয়ে ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, “অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এনেস্থিসিয়ার ভুলের কারণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।” তবে অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক ডা. সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, “এনেস্থিসিয়ায় ভুল হলে রোগীর জ্ঞান ফিরবে না। কিন্তু অপারেশনের পর রোগী জ্ঞান ফিরেছে এবং কথাও বলেছে।” মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে ভিকটিমের পরিবার বা লাশ কিছুই পাওয়া যায়নি। পরিবার দ্রুত লাশ নিয়ে দেলদুয়ারে তাদের বাড়িতে চলে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “ভিকটিমের পরিবারকে সংবাদ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.