নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে, এই সরকারের কাঠামো কেমন হবে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আলাদা আলাদা প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রাথমিকভাবে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছিল। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর এনসিসির প্রস্তাব বাতিল করা হয়, ফলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামোও বাতিল হয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে, কিন্তু তাতে ঐকমত্য হয়নি। এরপর গত রোববার বিএনপি তাদের প্রস্তাব উত্থাপন করে, সোমবার জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রস্তাব জমা দেয়। এনসিপি গত মে মাসে তাদের প্রস্তাব কমিশনের কাছে পাঠিয়েছিল। আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
**বিএনপির প্রস্তাব**
গত রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রস্তাব করেন। এতে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য পাঁচটি বিকল্প উপস্থাপন করা হয়:
১. রাষ্ট্রপতি সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন।
২. এটি সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের সমন্বয়ে একটি কমি� personally will not have voting rights.
৩. এটিও সম্ভব না হলে কমিটিতে সংসদে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলের একজন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হবে এবং রাষ্ট্রপতির ভোটাধিকার থাকবে।
৪. এই প্রক্রিয়ায়ও ঐദশ্য সম্মতি না পেলে ন্যূনতম ৫% ভোটপ্রাপ্ত বিরোধী দলগুলোর (প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত) প্রতিনিধিরা কমিটিতে থাকবে, রাষ্ট্রপতির ভোটাধিকার থাকবে।
৫. উপরের ধাপগুলোতে ঐকমত্য না হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসা যায়, তবে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে না রাখার বিষয়ে সব দল একমত। শেষ বিকল্প হিসেবে রাষ্ট্রপতির নাম বিবেচনা করা যেতে পারে।
**জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাব**
জামায়াতে ইসলামী একাধিক রূপরেখা প্রস্তাব করেছে। তারা বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১২০ দিনের মধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করবে, প্রয়োজনে আরও ৬০ দিন বাড়ানো যাবে। সংসদ ভেঙে গেলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে।
প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে সভা করে সরকারি দল/জোট থেকে পাঁচজন, প্রধান বিরোধী দল থেকে পাঁচজন এবং অন্যান্য বিরোধী দল থেকে দুজন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করবে। কমিটি একজনকে বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে স্পিকারের তত্ত্বাবধানে একটি সংসদীয় কমিটি গঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, উপনেতা, প্রধান হুইপ, বিরোধীদলীয় উপনেতা, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ এবং অন্যান্য বিরোধী দলের দুজন প্রতিনিধি থাকবেন। এটি ব্যর্থ হলে ১৩ জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে, প্রথম দুটি পদ্ধতি ব্যর্থ হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল করা হবে, তবে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাখা যাবে না।
**এনসিপির প্রস্তাব**
গত ২৫ মে এনসিপি ই–মেইলের মাধ্যমে তাদের প্রস্তাব পাঠায়। তারা সংসদ ভেঙে দেওয়ার তিন সপ্তাহ আগে ১১ সদস্যবিশিষ্ট সর্বদলীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে। কমিটিতে প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নির্ধারিত হবে, তবে ন্যূনতম ৫% ভোট প্রয়োজন।
সরকারি দল, প্রধান বিরোধী দল ও অন্যান্য বিরোধী দল তিনজন করে নয়জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করবে। নামগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। কমিটি ৮-৩ ভোটে একজনকে চূড়ান্ত করবে। ব্যর্থ হলে উচ্চকক্ষ ‘র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং’ পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবে।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.