Monday, July 7, 2025

দুদকের অভিযান: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে শ্রমিক থেকে প্রকৌশলী পদোন্নতিতে অনিয়মের সত্যতা


চট্টগ্রাম, ৭ জুলাই ২০২৫ – চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) শ্রমিক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজনকে নিয়ম ভঙ্গ করে উপসহকারী প্রকৌশলী, কর আদায়কারী, সড়ক তদারককারী, অনুমতিপত্র পরিদর্শক এবং হিসাব সহকারী পদে পদোন্নতি দেওয়ার সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার বিকেলে চসিক কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১–এর একটি দল।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের অবৈধভাবে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছি, যা পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।”

গত ৪ জুলাই প্রথম আলোর প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দুই বছরে, যখন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন, তখন এই অনিয়মগুলো ঘটেছে। ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়রের দায়িত্ব নেওয়া রেজাউলকে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার অপসারণ করে। তাঁর সময়ে ১৮৮ জনের নিয়োগ তালিকায় দেখা গেছে, অন্তত ৬৪ জন শ্রমিক পদ থেকে উচ্চ গ্রেডের পদে পদায়ন পেয়েছেন।

চসিকের জনবলকাঠামো অনুযায়ী, শ্রমিক পদ ২০তম গ্রেডের। তবে, এই শ্রমিকদের ১০ম গ্রেডের উপসহকারী প্রকৌশলী, ১৬তম গ্রেডের কর আদায়কারী বা অনুমতিপত্র পরিদর্শক পদে পদায়ন করা হয়েছে, যেখানে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা পরীক্ষার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।

উদাহরণস্বরূপ, মো. রোকনুজ্জামান ২০২৩ সালের ১৮ জুন শ্রমিক পদে যোগদানের দিনই সাগরিকা টেস্টিং ল্যাবের ল্যাব ইনচার্জ (উপসহকারী প্রকৌশলী) হিসেবে পদায়ন পান। রশিদ আহমেদ ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পেয়ে ১৯ দিন পর উপসহকারী প্রকৌশলী পদে বদলি হন। এইচএসসি পাস জাহেদুল আহসান ও এস এম রাফিউল হক মনিরীও নিয়োগের কয়েক দিনের মধ্যে উপসহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পান।

চসিকের কর্মচারী বিধিমালা-২০১৯ অনুযায়ী, উপসহকারী প্রকৌশলী পদে ২০ শতাংশ পদোন্নতি ও ৮০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। পদোন্নতির জন্য প্রার্থীকে ১২ বছর সড়ক তদারককারী বা বাতি পর্যবেক্ষক পদে চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়, যা এই ক্ষেত্রে মানা হয়নি।

চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, “দুদক যেসব নথিপত্র চেয়েছে, আমরা সরবরাহ করেছি। বাকি নথি আগামীকাল দেওয়া হবে।”



Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.