গাজীপুরে মাদক অভিযানে জব্দ তালিকায় ব্যাংক চেক অনুপস্থিত, সহকারী পরিচালকের অফিস সিলগালা
গত ২৩ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) গাজীপুরের টঙ্গী থেকে মো. রমিজ উদ্দিন নামে এক কথিত মাদক বিক্রেতার গ্রেপ্তারের পর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী পরিচালক মারফিয়া আফরোজকে দেখা যায়, যাঁর অফিসকক্ষ এখন অনিয়মের কারণে সিলগালা করা হয়েছে।গাজীপুরের টঙ্গীতে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ মো. রমিজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর ভাড়া বাসায় তল্লাশি চালায় ডিএনসি। এ সময় একটি ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হলেও মামলার জব্দ তালিকায় তা উল্লেখ করা হয়নি, যা সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। সূত্র জানায়, কয়েক লাখ টাকার ওই চেক দিয়ে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়, যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক। রমিজের পরিবারের অভিযোগের পর তদন্ত শুরু হয়, এবং চার কর্মকর্তা, যার মধ্যে সহকারী পরিচালক মারফিয়া আফরোজ রয়েছেন, তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। অভিযানটি ২২ জুন টঙ্গী সরকারি কলেজের সামনে শুরু হয়, যেখানে রমিজকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দক্ষিণ খা পাড়ার ভাড়া বাসায় তল্লাশি করে দুটি পলিব্যাগে ১৫,০০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মারফিয়া আফরোজের দায়ের করা মামলার এজাহারে ৫,০০০ ও ১০,০০০ ইয়াবার দুটি পলিব্যাগ এবং একটি মুঠোফোন উল্লেখ করা হয়, কিন্তু ব্যাংক চেকের কথা বাদ দেওয়া হয়। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মঙ্গলবার ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মারফিয়ার অফিস সিলগালা করা হয়। ছুটিতে থাকা মারফিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। মারফিয়া স্বীকার করেছেন, অভিযানে একটি ব্যাংক চেক উদ্ধার হয়েছিল, যা পরে তাঁর অফিসের ড্রয়ারে সিপাহি সোহেল রানা রেখেছিলেন। তিনি নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে চেকটি কীভাবে হ্যান্ডল করবেন, তা বুঝতে পারেননি বলে দাবি করেন। অভিযানে মোট আট কর্মকর্তা ছিলেন: পরিদর্শক শাহরিয়া শারমিন, উপপরিদর্শক আবদুল আল মামুন, মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, সহকারী উপপরিদর্শক মো. আতাউল হক, এবং সিপাহি সোহেল রানা, আবদুর রহমান, সাইমুন হাসান খান ও মো. লুৎফর রহমান। তবে শুধু মারফিয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, আতাউল হক ও সোহেল রানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা ডিএনসি’র মধ্যে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, শাস্তি হলে সবারই হওয়া উচিত। ডিএনসি’র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোস্তাক আহমেদ জানান, মারফিয়ার অফিস পরিদর্শনে গিয়ে আলামত ব্যবস্থাপনা সন্তোষজনক পাওয়া যায়নি, তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না, এবং তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।