৯ জুন, ২০২৫ : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবাহের ইতিবাচক ধারা অর্থনীতির জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই ২০২৪ থেকে মে ২০২৫) প্রবাসী বাংলাদেশিরা মোট ২,৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৭ শতাংশ বেশি। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশিরা।
চাঙ্গা প্রবাসী আয়, সৌদি আরবের অবদান সর্বোচ্চ
২০২৫ সালের মে মাসে প্রবাসীরা দেশে ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১.৭ শতাংশ বেশি। এই মাসে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৫৩.৩৪ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ১৮ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (৩৫.১৫ কোটি ডলার, ১১.৮৪ শতাংশ), তৃতীয় স্থানে যুক্তরাজ্য (৩৪.৬৮ কোটি ডলার), চতুর্থ মালয়েশিয়া (৩৪ কোটি ডলার), এবং পঞ্চম স্থানে যুক্তরাষ্ট্র (২২.৩৬ কোটি ডলার)। শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্যান্য দেশগুলো হলো ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার, এবং সিঙ্গাপুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেষনার ফলে রেমিট্যান্সের প্রকৃত উৎস দেশ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। পূর্বে, এক্সচেঞ্জ হাউসের নিবন্ধনের দেশকে রেমিট্যান্সের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হতো, যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র বা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রায়ই শীর্ষে উঠে আসত। নতুন নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় এখন সৌদ আরব শীর্ষে।
সৌদি আরবের অবদান সর্বোচ্চ হলেও, রেমিট্যান্স প্রবাহে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের এই প্রবৃদ্ধি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অবৈধ অর্থ স্থানান্তর চ্যানেল (হুন্ডি) এবং স্বল্পদক্ষ পেশার প্রাধান্যের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রত্যাশিত মাত্রায় বাড়ছে না।
এ.আই/এম.আর