আজ ২৮ জুন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন। ১৯৪০ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মাইক্রোফিন্যান্স এবং দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে তাঁর অগ্রণী ভূমিকার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।
২০০৬ সালে ড. ইউনূস এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই সম্মান অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বখাদ্য পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭), যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
দুলা মিঞা সওদাগর ও সুফিয়া খাতুনের সন্তান ড. ইউনূস পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। চট্টগ্রাম কলিজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ৩৯,০০০ ছাত্রের মধ্যে ১৬তম স্থান অর্জন করেন। চট্টগ্রাম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর ১৯৬৫ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ‘বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার’ পরিচালনা করে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের সময় দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন ড. ইউনূস। ১৯৭৬ সালে জোবরা গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প চালু করেন, যা ১৯৮৩ সালে পূর্ণাঙ্গ গ্রামীণ ব্যাংক হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এই মডেল বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিশ্বের ৪০টি দেশে এটি অনুসরণ করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলনটি শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট ২০২৪-এ ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে তিনি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।