০২ জুন, ২০২৫ : ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট আজ ২ জুন, রোববার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বিকেল ৩টায় এই বাজেট ঘোষণা করেন। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যেখানে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এই বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। তবে, শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে, আবার কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে:
১. রড ও স্টিল: নির্মাণ শিল্পের জন্য রড ও স্টিলের আমদানিতে ভ্যাট ২০-২৩ শতাংশ এবং উৎপাদনে ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। এতে রডের দাম প্রতি টনে প্রায় ১,৪০০ টাকা বাড়তে পারে। বর্তমানে স্ক্র্যাপ আমদানিতে প্রতি টনে ১,৫০০ টাকা এবং বিলেট ও রড উৎপাদনে ২,২০০ টাকা ফিক্সড ভ্যাট আদায় করা হয়।
২. এসি ও ফ্রিজ: এয়ার কন্ডিশনার ও ফ্রিজের উৎপাদনে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দেশীয় উৎপাদকদের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে।
৩. মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ: মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন যন্ত্রাংশে শুল্ক-ভ্যাট বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে এই শিল্পে দাম বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪. সিগারেট: সিগারেট পেপারের উপর সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে, যা সিগারেটের দাম আরও বাড়াতে পারে।
৫. দেশীয় মোবাইল ফোন: মোবাইল ফোন উৎপাদনে ভ্যাট ২ থেকে আড়াই শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে, যা দেশে তৈরি মোবাইল ফোনের দাম বাড়াতে পারে।
৬. ব্যাটারিচালিত রিকশা: ব্যাটারিচালিত রিকশার মোটরের কাস্টমস শুল্ক ১ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।
৭. কসমেটিক্স: লিপস্টিকসহ অন্যান্য কসমেটিক্স পণ্যের আমদানিতে ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
৮. ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য: ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যে ভ্যাট দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
৯. ব্লেড ও টেবিলওয়্যার: শেভিং ব্লেড এবং প্লাস্টিকের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার ও গৃহস্থালি সামগ্রীতে ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
১০. দেশীয় সুতা: কটন ও মেন মেইড ফাইবারের সুতার উৎপাদনে নির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।
১১. হেলিকপ্টার: হেলিকপ্টার আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানোর প্রস্তাব রয়েছে।
১২. বিদেশি চকলেট ও খেলনা: চকলেট ও বিদেশি খেলনার শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
১৩. মার্বেল-গ্রানাইট: মার্বেল ও গ্রানাইটের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।
উপসংহার: প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর লক্ষ্যে শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে পারে। তবে পরিবেশবান্ধব পণ্যে ভ্যাট মওকুফের মতো উদ্যোগও থাকছে, যা ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির কারণ হতে পারে।