কুষ্টিয়া, ১৪ মে ২০২৫: কুষ্টিয়ার হরিশংকরপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় মামুন আলী তার স্ত্রী মেঘলা খাতুনকে হত্যা করেছেন এবং তাদের দুই শিশু কন্যা কুলসুম (৪) ও জান্নাতকে (১.৫) গুরুতর আহত করেছেন। পরকীয়ার সন্দেহে এই হামলা চালানো হয়। মামুন নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করে গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ মে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের নিজ বাড়িতে। মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেঘলা খাতুনকে (২২) এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মেঘলার মৃত্যু হয়। এ সময় মামুন তার দুই মেয়েকে আছড় মেরে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। শিশু দুটির মাথা, মুখ ও শরীরে গুরুতর জখম রয়েছে, এবং তারা স্যালাইন লাগানো অবস্থায় তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে। মামুন নিজের মাথা ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
মামুনের মা সুফিয়া বেগম জানান, মেঘলার পরকীয়ার কারণে দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। “মেঘলা আগে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। দুই দিন আগে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। ঘটনার রাতে মেঘলা মোবাইলে কারও সঙ্গে কথা বলছিল, মামুন তা দেখে ফেলে। এরপর সে স্ত্রী ও মেয়েদের ওপর হামলা করে,” তিনি বলেন। প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা জানান, মেঘলার পরকীয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হোসেন ইমাম বলেন, “তিনজনের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। রাত ১১টায় মায়ের মৃত্যু হয়। শিশু দুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
শিশু দুটি এখনও জানে না তাদের মা আর বেঁচে নেই। তারা হাসপাতালে জীবনের জন্য লড়াই করছে।
এ.আই/এম.আর