Sunday, May 18, 2025

ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকের কষ্টের ফসল সড়কে নষ্ট, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

ঠাকুরগাঁও | ১৮ মে ২০২৫ : ঠাকুরগাঁও জেলায় কৃষকদের উৎপাদিত আলু সংরক্ষণের অভাবে পচে নষ্ট হচ্ছে। ফলে বস্তায় বস্তায় পচা আলু পুকুর, ডোবা ও সড়কের দুই পাশে ফেলে দিচ্ছেন কৃষকরা। 

উৎপাদন খরচ না উঠায় এবং ঋণের বোঝা বাড়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। কৃষকদের অভিযোগ, এই বিপর্যয়ে কৃষি বিভাগের কাছ থেকে কোনো কার্যকর পরামর্শ বা সহায়তা পাওয়া যায়নি।  

ঢোলারহাট, আঁকচা ও নারগুনসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, প্রান্তিক কৃষকরা উৎপাদন খরচ তুলতে বাড়িতে বা আশপাশে সেড তৈরি করে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই পচন ধরায় আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হিমাগারে জায়গার অভাবে বেশিরভাগ কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে পারেননি। ফলে তারা এখন দিশেহারা।
কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আলু উৎপাদনে ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু বর্তমানে আলু বিক্রি করে ২০ হাজার টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। পচা আলু ফেলার জায়গা না পেয়ে অনেকে রাস্তার পাশে, পুকুরে বা যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছেন। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে চলাচলও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। জেলায় ১৭টি হিমাগারের ধারণক্ষমতা মাত্র দে�ড় লাখ মেট্রিক টন। এ বছর আলুর কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ ২২-২৫ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৪ টাকায়, আর পচা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪ টাকা কেজিতে। অনেক কৃষক আলু গরুর খাদ্য হিসেবে বিনামূল্যে দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, একসময় ঠাকুরগাঁওয়ের আলু বিদেশে রপ্তানি হতো। কিন্তু সংরক্ষণ ও রপ্তানির উদ্যোগের অভাবে এখন দেশেই আলু পচে নষ্ট হচ্ছে। আলু ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম ও আবু রায়হান বলেন, সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ ও রপ্তানির ব্যবস্থা না থাকায় এই দুরবস্থা। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, “আলু নষ্ট বা পচে গেছে, এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে কৃষকদের আলু সংরক্ষণে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
এ.আই/এম.আর

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.