১১ মে, ২০২৫ : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান, মেয়ে লাবিবা জোহা অঙ্গনা এবং ছেলে ইমতিনান ওসমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে জারি করা তলবি চিঠিতে তাদের আগামী ১২ মে, ২০২৫-এ হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিমের স্বাক্ষরিত নোটিশ অনুযায়ী, অনুসন্ধান টিমে রয়েছেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং পিয়াস পাল।
শামীম ওসমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টেন্ডার বাণিজ্য, বিভিন্ন খাতে চাঁদাবাজি, পরিবহন ও জুট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ, দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্য, জমি দখল এবং সরকারি অর্থ আত্মসাত। এছাড়া, তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ক্রয় এবং দুবাইয়ে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে।
শামীম ওসমান ১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন তার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত সম্পদ ছিল না। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং ২০০৯ সালে দেশে ফেরেন। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিতর্কিত নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের হলফনামায় তার ১০ শতাংশ কৃষি জমি, ১৬ শতাংশ জমিতে দোতলা বাড়ি, উত্তরায় ৯ কাঠা জমি এবং বাড়ি, দোকান ভাড়া, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যবসা ও ব্যাংকের সুদ থেকে বছরে ২৭ লাখ টাকা আয়ের উল্লেখ ছিল।
বর্তমানে তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১২৩ শতাংশ কৃষি জমি, ১০ শতাংশ অকৃষি জমি, পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট, দুটি ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি এবং বছরে ৭৯ লাখ টাকা আয়।
অভিযোগ রয়েছে, শামীম ওসমান ও তার পরিবার নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১৩টি পণ্যবাহী জাহাজ, জ্বালানি তেল আমদানি ও পরিবহন ব্যবসা এবং নসিব পরিবহন জবরদখল। পরিবহন খাত, এলজিইডি ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে চাঁদাবাজি এবং নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ও চাষাড়া ক্লাব জোরপূর্বক দখলের অভিযোগও রয়েছে। তার মেয়ে কানাডার নাগরিক বলে জানা গেছে।
এর আগে, ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং শ্যালক তানভীর আহমেদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার (প্রায় ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা) পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলায় কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমা ওসমান এবং এমডি তানভীর আহমেদকে আসামি করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল মিনিটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার করেছেন।
এ.আই/এম.আর