ঢাকা, ২০ মে ২০২৫: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষার্থী এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি বন্ধের জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২০ মে) আইইআর গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীরা সাম্যের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২২ মে) পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লং মার্চের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সাম্যের বন্ধু এবং ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান বলেন, “গত ১৩ মে রাতে আমাদের বন্ধু শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, তার হত্যার পর রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি আমাদের হতাশ করেছে। আমরা চাই, সাম্যের হত্যার বিচারের দাবিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ হোক।”
তিনি আরও বলেন, “সাম্যকে নিয়ে অনলাইনে কুরুচিপূর্ণ ও বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে, তার চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে। এই ঘৃণিত কাজের সঙ্গে জড়িতদের প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।”
শিক্ষার্থীদের দাবি:
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা সাম্যের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত দাবিগুলো উত্থাপন করেছেন:
১. সাম্যের হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
২. ঘটনাস্থলের সকল সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।
৩. হত্যার সময় জনতা কর্তৃক আটককৃত সহযোগীদের পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। জড়িত পুলিশ সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
৪. শাহবাগ থানার পাশে গড়ে ওঠা অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতি বন্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে তৎপর হতে হবে।
৬. উপাচার্য, প্রক্টরসহ প্রশাসনকে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার নিয়মিত ফলোআপ নিতে হবে এবং সাম্যের পরিবার ও বন্ধুদের এতে যুক্ত রাখতে হবে।
৭. ‘সাম্যের বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি’ গঠন করতে হবে, যেখানে তদন্ত কর্মকর্তা, উপাচার্য, প্রক্টর, আইইআর পরিচালক, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতিনিধি থাকবেন।
৮. যেসব সংগঠন সাম্যের হত্যার প্রতিবাদ জানায়নি, তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান।
৯. ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না দাবি পূরণ হচ্ছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।English Report:
এ.আই/এম.আর