আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন, তারাই ভোটপ্রক্রিয়া ভণ্ডুল ও অনির্বাচিত সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশি শক্তির খেলা বন্ধে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর এফডিসির কনফারেন্স কক্ষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, বিগত সংসদের মতো আগামী সংসদেও বড় একটি অংশ জুড়ে থাকবে ধনী ও কালো টাকার মালিকরা। এতে গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য পরোক্ষভাবে ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই আরপিও চূড়ান্ত করা হয়েছে, জামানতের পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে এবং ব্যয়সীমা ২৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩৫-৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। গত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই ব্যবস্থা উৎখাত করতে দুই হাজারের বেশি শহীদের রক্ত দিতে হয়েছে। তবে এবার অন্তত ভীতি-হুমকি-প্রলোভন ছাড়া জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “দুই-এক জায়গায় জঙ্গি মিছিল বা বাস-ট্রাকে আগুন দিয়ে কোনো অপশক্তি নির্বাচন আটকাতে পারবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের যে তর্ক-বিতর্ক চলছে তাতে আসন্ন নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে না। তাদের এই মত-দ্বিমতই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে নির্বাচন ও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে যাতে দুর্নীতির পালাবদল না হয়।” তিনি আরও বলেন, “এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের বডি ক্যামেরা ব্যবহারের কথা রয়েছে। যদি নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা দায়িত্বশীল আচরণ না করে, তাহলে অতীতের মতো ধানক্ষেতে-পাটখেতে ভোটের বাক্স পাওয়া যেতে পারে। যা আমরা প্রত্যাশা করি না। তবে যারা এবার সরকার গঠন করবে তারা বিরোধী দল ও মতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন বলে বিশ্বাস করি।”
ছায়া সংসদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইডেন মহিলা কলেজ এবং রানার-আপ হয়েছে ঢাকা কলেজ।
