Saturday, October 18, 2025

জুলাই সনদ বানচাল হলে দেশ পিছিয়ে পড়বে, গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

 


বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান বলেছেন, জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এটি অতীতের যেকোন বন্দোবস্তের চেয়ে স্বচ্ছ, সুগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। এই সনদ আইনের পাতায় স্মরণীয় একটি ইতিহাস হিসেবে রয়ে যাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যদি ব্যর্থ হই তাহলে আমরা আগামী প্রজন্মের কাছে ভিরু কাপুরুষের উপমা হয়ে থাকবো বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) এফডিসিতে গণতন্ত্র সুরক্ষায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজিত ছায়া সংসদে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই সনদ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা উত্তরণ সম্ভব। জুলাই সনদ নিয়ে তর্ক করা হলে তা হবে অনাহত বিতর্ক। এটা কোরআন বা বাইবেল নয় যে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। ৩৬ জুলাইয়ের পরাজিত শক্তির ন্যারেটিভ গ্রহণ করে, আমরা যদি জুলাই সনদ বানচাল করতে চাই, তবে দেশ পিছিয়ে পড়বে। 
’৭২ এর সংবিধানকে অনেক কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার আইনের শাসন ব্যাহত করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। জুলাই হত্যার বিচারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়তে এগিয়ে যাবে। এই বিচারকার্য কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না।  বিগত ফ্যাসিস্টদের গুম-খুনের বিচারের সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে, যুক্তি-তর্ক চলছে, এখন রায়ের অপেক্ষা। জুলাই চেতনার অঙ্গীকারই এই বিচারের মূল ভিত্তি।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ জাতির এক ঐতিহাসিক দলিল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপর আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। জুলাই সনদকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই সনদ ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবা শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠার শঙ্কা রয়েছে। দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে। আইন শৃঙ্খলার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে। এই দলিলে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের ন্যায়বিচার, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন ঘটেছে।  এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথরেখা আরো সুস্পষ্ট হলো, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেলো। তবে সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। জুলাই সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় অঙ্গীকার হিসেবে জনগণের কাছে বিবেচিত হবে। যে অঙ্গীকারের মাধ্যমে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ক্ষমতার লোভ ত্যাগ করে জনকল্যাণে কাজ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামীর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পরিচালিত না হলে জাতির প্রতি অবিচার করা হবে। আর যে দল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে না, জনগণ তাদেরকে ভবিষ্যতে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। 

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকগণ বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন ও সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.