Wednesday, September 3, 2025

বাঁকখালী নদীর তীরে উচ্ছেদ অভিযানে বিক্ষোভ, ফিরে গেল যৌথ বাহিনী

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধভাবে নির্মিত ঘরবাড়ি উচ্ছেদ ঠেকাতে স্থানীয় বাসিন্দারা খননযন্ত্র ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন। বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, তৃতীয় দিনে সকাল ১১টায় পেশকারপাড়া অংশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে কয়েক শ বাসিন্দা বাধা সৃষ্টি করেন। বিকেলে পুনরায় অভিযান শুরু হলে বিক্ষোভকারীরা খননযন্ত্র ঘিরে ধরে, ফলে যৌথ বাহিনী অভিযান বন্ধ করে ফিরে যায়।

গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট সরকারকে চার মাসের মধ্যে নদীর সীমানায় দখলদারদের তালিকা তৈরি করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন। নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে বিআইডব্লিউটিএ’র নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই অভিযান শুরু করে। গত দুই দিনে কস্তুরাঘাট এলাকায় ৩৪৩টি পাকা ও আধা পাকা ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫৬ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়। তবে মঙ্গলবার থেকে অভিযান বাধার সম্মুখীন হয়। সেদিন ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্যের মাথা ফেটে গেলেও অভিযান চলেছিল। পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় পেশকারপাড়ায় অভিযান শুরু হয়। সেখানে নদীর তলদেশ ভরাট করে শতাধিক পাকা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি নির্মিত হয়েছে। খননযন্ত্র নিয়ে অভিযান শুরু হলে কয়েক শ নারী-পুরুষ বিক্ষোভ শুরু করেন, খননযন্ত্র ঘিরে অভিযান বন্ধের অনুরোধ জানান। কেউ কেউ মাটিতে শুয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা বলেন, “মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা পাহাড়ের শিবিরে বছরের পর বছর থাকতে পারে, আমরা ভূমিহীন বাংলাদেশিদের কী অপরাধ? পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ অন্যায়।” কেউ কেউ দলিল দেখিয়ে দাবি করেন, নদীর জমি হলেও তারা রেজিস্ট্রি করে কিনেছেন এবং নিয়মিত খাজনা দিচ্ছেন। তারা বলেন, খতিয়ানভুক্ত জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য আলোচনা ও ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন। বেলা আড়াইটায় নতুন সেতু ও কস্তুরাঘাট এলাকায় অভিযান শুরু হলে বাধার সম্মুখীন হয়। বিআইডব্লিউটিএ, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বাগবিতণ্ডা হয়। বিকেল ৪টায় অভিযান বন্ধ করে যৌথ বাহিনী ফিরে যায়, তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কে এম আরিফ উদ্দিন বলেন, “বাধার মুখে ফিরে যাচ্ছি, কিন্তু অভিযান বন্ধ হবে না। নুনিয়াছটা থেকে খুরুশকুল সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে দখল ও ভরাট করে নির্মিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।” বিআইডব্লিউটিএ জানায়, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে নদীতীরের ৭২১ একর জমি নদীবন্দর ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসনকে এই জমি হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা দখলমুক্ত করা যায়নি। বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু হয়েছে, যা ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.