ফরিদপুর: সংসদীয় আসন পুনর্নির্ধারণের অংশ হিসেবে ভাঙ্গা উপজেলাকে বিভক্ত করার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে আলগী ইউনিয়নের সোয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে অবরোধ শুরু হয়। সকাল নয়টার মধ্যে হামিরদী ইউনিয়নের মনসুরাবাদ, মাধবপুর ও পুকুরিয়া এলাকায় শত শত মানুষ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন।
নির্বাচন কমিশনের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, দেশের ৪৬টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুরের দুটি আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। ফরিদপুর-৪ আসন (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সেগুলো ফরিদপুর-২ আসনের (নগরকান্দা ও সালথা) সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর থেকে ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভাঙ্গার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ একযোগে সড়কে নেমে আসেন এবং ‘আমরা ভাঙ্গার মানুষ, ভাঙ্গার সঙ্গেই থাকতে চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন। অবরোধের ফলে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত বাস ও ট্রাক আটকা পড়ে। ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও বিক্ষোভকারীদের বিপুল উপস্থিতির কারণে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন।
হামিরদী ইউনিয়নের হামিদ গ্রামের বাসিন্দা পলাশ সাহা বলেন, ‘আমরা ভাঙ্গাতে আছি, ভাঙ্গাতেই থাকতে চাই। নগরকান্দার আধিপত্য কোনোভাবেই মেনে নেব না। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রতিহত করব।’
ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে বাবুল এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান। বৃহস্পতিবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার—এই দুই ইউনিয়নকে ভাঙ্গার সঙ্গে ফেরত আনব। যা যা করা দরকার, সব করব। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
অবরোধের কারণে যানবাহন আটকে পড়ায় অনেকে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এনসিপির ভাঙ্গা উপজেলার আহ্বায়ক মো. আশরাফ বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ভাঙ্গা পৌরসভার সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ‘ভাঙ্গা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে ঘোষিত সময়ের আগেই সর্বস্তরের মানুষ অবরোধ শুরু করে।
ফরিদপুর-৪ আসনের জামায়াতের মনোনয়নপ্রত্যাশী সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভাঙ্গা একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। আমরা এই বিভাজন মেনে নেব না। আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে এটি প্রতিহত করব এবং আমাদের দাবি আদায় করব।’
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরে আগে পাঁচটি সংসদীয় আসন ছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাস করে তা চারটিতে নামিয়ে আনা হয়। তখন ভাঙ্গাকে চরভদ্রাসন ও সদরপুরের সঙ্গে যুক্ত করে ফরিদপুর-৪ আসন সৃষ্টি করা হয়।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.
by 
