বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউ) অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে সাতজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১০টায় একাডেমিক ভবন-১-এর নিচে তাঁরা অনশন শুরু করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে তিনি তাঁদের পাশে মশারি টানিয়ে রাতভর অবস্থান করেন, যা একটি বিরল সংহতি প্রকাশের ঘটনা।
শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। সকালে উপাচার্য সেখান থেকে চলে যান। অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের (২০২২-২৩ সেশন) অমিয় মণ্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের (২০২১-২২ সেশন) তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের (২০২২-২৩ সেশন) আবুবকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের (২০২১-২২ সেশন) পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের (২০২১-২২ সেশন) তামিম আহমেদ রিয়াজ এবং আইন বিভাগের শওকত ওসমান সাক্কার।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন। রাত ১টার দিকে উপাচার্য কর্মসূচিস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ চলছে এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অগ্রগতি প্রকাশ পাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর উপাচার্য তাঁদের পাশে মশারি টানিয়ে রাতে অবস্থান করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৯ জুলাই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এরপর ১৪ আগস্ট থেকে টানা এক সপ্তাহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি এবং মহাসড়ক অবরোধের পরও কোনো আশ্বাস না পেয়ে তাঁরা অনশন শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন।
শিক্ষার্থী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইউজিসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুইবার সংবাদ সম্মেলন করেছি। ৩৭ দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু ইউজিসির কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কেউ যোগাযোগ করে প্রতিশ্রুতি না দিলে আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।’
শওকত ওসমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরোলেও পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো তৈরি হয়নি। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র চারটি আবাসিক হলে ১,৫০০ শিক্ষার্থীর জায়গা রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, আবাসন, পরিবহন ও গ্রন্থাগারের তীব্র সংকটের কারণে সেশনজট বাড়ছে। এজন্য তাঁরা অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে এবং জমি অধিগ্রহণের কাজ বিভিন্ন ধাপে এগোচ্ছে। তবে আস্থার সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা অনশন পর্যন্ত পৌঁছেছেন।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.