Saturday, August 2, 2025

রাস্তার কাজে অনিয়ম, অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে গণপিটুনি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় রাস্তার নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করায় স্থানীয় গ্রামবাসীদের হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন উপজেলা এলজিইডির কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম। শনিবার (২ আগস্ট, ২০২৫) দুপুরে ময়দানদীঘি ইউনিয়নের গাইঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাইঘাটায় প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছিল। কাজের মান খারাপ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। শনিবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা কাজ বন্ধ করে দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান জাহিদুল ইসলাম। তিনি অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলে উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করে। পরে তিনি একটি ধানক্ষেতে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে জীবন রক্ষা করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন জানান, এই রাস্তার কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। পাশের আরেকটি রাস্তার কাজ শেষ হলেও এটি বারবার অনিয়মের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগের পর তিনি নিজে গিয়ে দেখেন, কাজের মান সত্যিই নিম্নমানের। তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতায় কাজ বন্ধ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন, সামান্য ব্যবহারে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। মিস্ত্রিরা তখন হাতুড়ি দিয়ে তা ঠিক করার চেষ্টা করছিলেন। আরেক যুবক মাসুদ রানা বলেন, কাদা ও ধুলাবালির ওপরেই কার্পেটিং করা হচ্ছিল। প্রতিবাদ করলে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মিস্ত্রি আবুল কালাম অনিয়ম স্বীকার করে বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় বালু জমেছিল, তবুও কার্পেটিং করা হয়। ময়লা পরিষ্কার না করায় কার্পেটিং উঠে গেছে। অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম বলেন, অফিস থেকে তাকে কাজ দেখতে যেতে বলা হয়। গিয়ে দেখেন স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করেছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোনো অনিয়ম হয়নি। তখনই জনতা উত্তেজিত হয়ে তাকে মারধর করে। তিনি জানান, ১০ দিন আগে বিটুমিনাস প্রাইম কোট দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বৃষ্টির কারণে বালু জমে যায়। পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং করায় সমস্যা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মিজানুর ইসলাম জানান, এটি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রকল্প। তিনি সাব-ঠিকাদার হিসেবে যুক্ত ছিলেন এবং বিস্তারিত এখন মনে নেই।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছেন এবং স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করেছে। তবে কারও গণপিটুনির খবর তিনি এখনো পাননি।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.