জনগণের আকাঙ্ক্ষা না বুঝলে রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্র্যাব মিলনায়তনে *‘ফ্যাসিস্ট আমলে গণমাধ্যম, বর্তমান অবস্থা: জনগণের প্রত্যাশা’* শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক দল জনগণের এই আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ হবে, তাদের বাংলাদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সেমিনারটির আয়োজন করে জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল, যুক্তরাষ্ট্র। আমীর খসরু বলেন, স্বৈরাচারী শাসন টিকে থাকতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে হয়। শেখ হাসিনার আমলে গণমাধ্যম বন্ধসহ যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটারই কথা ছিল। কারণ, জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করলে এ ধরনের ঘটনা না ঘটালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারতেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে শুধু সাংবাদিকতা নয়, যাঁরা সত্যিকার অর্থে ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন, তাঁরাও ব্যবসা করতে পারেননি। তিনি বলেন, “ব্যবসা ছিল লুটপাটের ব্যবসা। এ কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ ছিল না। একইভাবে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে।” আমীর খসরু বলেন, শুধু রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করলে চলবে না, অর্থনীতি ও গণমাধ্যমকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলেই গণতন্ত্র হবে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রতিফলন না ঘটলে গণতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করবে না। তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে না পারলে রাজনীতি সফল হবে না এবং সাংবাদিকরা মুক্তভাবে কাজ করতে না পারলে গণতন্ত্র প্রতিফলিত হবে না। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম। তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পথ রুদ্ধ করতে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে। এই আইনে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১,৪৩৬টি মামলা হয়, যাতে কমপক্ষে ৪,৫২০ জনকে আসামি করা হয়। তিনি আরও বলেন, এই সময়ে কমপক্ষে ৪৫১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়, যার মধ্যে ২০৯ জন জাতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত এবং ১৯৭ জন স্থানীয় সাংবাদিক। অন্তত ৯৭ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়, যার মধ্যে ৫০ জন স্থানীয় সাংবাদিক। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ কাসেম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন হায়দার। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম।