২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে) ভারতের আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল। অভিযোগে বলা হয়, গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি, তাঁর ভাতিজা সাগর আদানি এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের জ্বালানি খাতে চুক্তি পেতে বড় ধরনের ঘুষের আয়োজন করেছিলেন। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর আদানি গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রে তাদের লবিং কার্যক্রমকে সম্পূর্ণ রূপান্তরিত করে, যা সাধারণ বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টা থেকে সংকট মোকাবিলার বড় ধরনের প্রচারে পরিণত হয়।
মার্কিন ফেডারেল লবিং রেকর্ডের (২০২৩-২০২৫) বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আদানি গ্রুপ তিন ধাপে কৌশল গ্রহণ করেছে। এ তথ্য দিয়েছে ওপেনসিক্রেটস, যিনি মার্কিন রাজনীতিতে অর্থের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন। আদানি গ্রুপ ডিওজে’র অভিযোগকে “ভিত্তিহীন” বলে নাকচ করেছে। ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বরের বিবৃতিতে তারা দাবি করে, তারা সবসময় সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়ম মেনে চলার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখে।
**প্রথম ধাপ (২০২৩): সীমিত বাণিজ্যিক লবিং**
২০২৩ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে আদানি গ্রুপের লবিং ছিল সীমিত এবং ব্যবসায়িক লক্ষ্যকেন্দ্রিক। মোট খরচ ছিল ৪০ হাজার ডলার। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আদানি সোলার ইউএসএ এবং একমাত্র লবিস্ট অনুরাগ ভার্মা এটি পরিচালনা করেন। লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য বিভাগ, পররাষ্ট্র দপ্তর, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এবং ওভারসিস প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ। মূল মনোযোগ ছিল সৌরবিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক স্বার্থ। ভার্মা, ১৯৯০-এর দশক থেকে ভারতীয় ও ভারতীয়-আমেরিকান স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছেন
**দ্বিতীয় ধাপ (২০২৪ সালের শেষ): অভিযোগের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া**
২০২৪ সালের নভেম্বরে ডিওজে’র অভিযোগের পর আদানি গ্রুপের কৌশলে বড় পরিবর্তন আসে। ২১ নভেম্বর তারা আকিন গাম্প স্ট্রস হাওয়ার অ্যান্ড ফেল্ড নামক আইন ও লবিং ফার্ম নিয়োগ করে। নিবন্ধনে “সরবরাহ শৃঙ্খল” উল্লেখ থাকলেও, সময়টি ইঙ্গিত দেয় এটি আইনি সংকট মোকাবিলার জন্য। লবিং দল বেড়ে পাঁচজনের হয়, যার মধ্যে চারজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, যেমন সাবেক কংগ্রেস সদস্য ইলিয়ানা রস-লেহটিনেন। খরচ বেড়ে ৭০ হাজার ডলারে দাঁড়ায়, এবং হোয়াইট হাউস যুক্ত হয় লক্ষ্য তালিকায়।
**তৃতীয় ধাপ (২০২৫): উচ্চপর্যায়ের আইনি প্রতিরক্ষা**
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে লবিং খরচ বেড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারে পৌঁছায়। ২০ জানুয়ারি আদানি গ্রিন এনার্জি দুটি শীর্ষ আইনি সংস্থা—কার্কল্যান্ড অ্যান্ড ইলিস এলএলপি এবং কুইন ইমান্যুয়েল আর্কুহার্ট অ্যান্ড সুলিভান এলএলপি—নিয়োগ করে। এই ফার্মগুলো “সবুজ জ্বালানি ও ফৌজদারি-দেওয়ানি মামলা” নিয়ে কাজ করছে, যা ডিওজে’র মামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। লবিস্টের সংখ্যা বেড়ে আটজন, যার মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্টের ডেপুটি কাউন্সেল উইলিয়াম বার্ক। লক্ষ্য এখন শুধু পররাষ্ট্র দপ্তর, যা আন্তর্জাতিক অভিযোগের কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
ফেডারেল রেকর্ডে দেখা যায়, আদানি গ্রুপ বাণিজ্যিক প্রচার থেকে আইনি ও রাজনৈতিক লবিংয়ে মনোযোগ দিয়েছে। খরচ বৃদ্ধি, শীর্ষ আইনি সংস্থার নিয়োগ এবং “ফৌজদারি মামলা” নিয়ে কাজ স্পষ্ট করে, তারা আইনি ও ভাবমূর্তি সংকট মোকাবিলায় কাজ করছে। এছাড়া, ২০২৫ সালের মার্চে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা এবং ব্রুকলিনের মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস ও ডিওজে’র সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তারা ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ মামলা বাতিলের চেষ্টা করছে।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.