Wednesday, July 23, 2025

নাটোরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ জনসহ ৮ জনের মৃত্যু, এলাকায় শোকের ছায়া

নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে আটজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের একই পরিবারের সদস্য। বাকিরা তাদের স্বজন এবং মাইক্রোবাসের চালক। তারা সিরাজগঞ্জে অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ট্রাকের ধাক্কায় তাদের সকলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ধর্মদহ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দুর্ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২৩ জুলাই ২০২৫) সকাল ১০টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের আইড়মারী এলাকার তরমুজ পাম্পের সামনে। ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত তিনজনকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে একজন মারা যান। বাকি দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, কিন্তু সেখানেও তারা বাঁচেননি। নিহতরা হলেন- ধর্মদহ গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫০), শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন আন্না (৫৫), মিজানুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন আনু (৫০), জাহিদুলের বোন প্রাগপুর গ্রামের ইতি খাতুন (৪০), ধর্মদহ গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাহাব হোসেন (৩৫), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়ীয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আঞ্জুমানারা (৭৫) এবং মাইক্রোবাস চালক সাহাব হোসেন রুবেল (৩৫)। জাহিদুলের চাচাতো ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জানারুল ইসলাম জানান, সকাল ৭টার দিকে তারা মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জে জাহিদুলের ছেলের অসুস্থ স্ত্রী শাফিয়া বেগমকে দেখতে যাচ্ছিলেন। পথে ট্রাকের ধাক্কায় পাঁচজন ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা, যাদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের, এবং জাহিদুলের বোন, শাশুড়ি ও শালিকাসহ মোট আটজন মারা গেছেন। নিহতদের স্বজন আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “তারা আমার আত্মীয়-স্বজন। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নান্দীরামধু গ্রামে অসুস্থ পুত্রবধূকে দেখতে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা সবাই মারা গেছেন।” জাহিদুলের আরেক চাচাতো ভাই মানজারুল ইসলাম খোকন জানান, জাহিদুলের দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন। দুই দিন আগে তাদের এক ছেলের স্ত্রীর অপারেশন হয়েছিল। তাকে দেখতে সকাল ৭টায় মাইক্রোবাস ভাড়া করে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন তারা। পথে এই দুর্ঘটনায় পরিবারের সাতজনসহ চালক মারা গেছেন। বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, মরদেহ হস্তান্তর ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান শেখ বলেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ধর্মদহ, একজন প্রাগপুর এবং বাকিরা গাংনীর বেতবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় শোকের মাতম চলছে, হাজারো মানুষ নিহতদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে ভিড় করছেন।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.