Thursday, July 10, 2025

ঘরে হাঁটুপানি, ভেলায় করে অন্তঃসত্ত্বাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় কলাগাছের ভেলায় করে অন্তঃসত্ত্বাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে। গতকাল বুধবার দুপুরে

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় কলাগাছের ভেলায় করে অন্তঃসত্ত্বাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে। সকাল থেকে ঘরে পানি উঠতে শুরু করায় অন্তঃসত্ত্বা কামরুন নাহারকে (২৩) নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তাঁর মা ও চাচি। দুপুর নাগাদ ঘরে হাঁটুপানি। বাধ্য হয়ে কলাগাছের ভেলায় করে কামরুন নাহারকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। গতকাল বুধবার দুপুরে ভেলাটি বুকসমান পানি মাড়িয়ে ফুলগাজী উপজেলা বাজারের সামনে পৌঁছলে কোনো যানবাহন ছিল না। স্থানীয়দের সহায়তায় ফেনী থেকে আসা এক সাংবাদিক পিকআপ ভাড়া করে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। গতকাল সন্ধ্যায় ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন কামরুন নাহার। তাঁর স্বামী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, অস্ত্রোপচার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে সন্তানের জন্ম হয়েছে। মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন ইউসুফ। তিনি বলেন, স্ত্রীর প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল আগস্টের প্রথম সপ্তাহ। তাই তাঁকে ফুলগাজী উপজেলার পূর্ব ঘনিয়ামোড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে তিনি রাঙামাটিতে কর্মস্থলে চলে যান। মঙ্গলবার রাত থেকে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকলে তিনি স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে স্ত্রীর প্রসবব্যথা ওঠে। তখন শাশুড়ি ও চাচিশাশুড়ি কলাগাছের ভেলায় করে কামরুনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রথমে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও সেখান থেকে তাঁকে ফেনীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা দেড়টায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স রত্না রানী বসাক বলেন, কামরুন নাহার স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও শিশু সুস্থ, তবে রাতে মায়ের বুকের দুধ না পাওয়ায় শিশুটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পানি থেকে ভেলায় তুলে হাসপাতালে পাঠাতে সহযোগিতা করা স্বেচ্ছাসেবক ও গণমাধ্যমকর্মী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, বন্যার ভিডিও ধারণের সময় তিনি দেখেন, দুই বয়স্ক নারী এক প্রসূতিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি দ্রুত মোটরসাইকেলে গিয়ে পিকআপ ভাড়া করেন। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে প্রসূতি তখন একটি দোকানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ফেনীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বন্যা চলাকালীন ও পরবর্তী সময়েও এসব টিম কাজ করবে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.