Thursday, July 3, 2025

মাইক্রোসফটের ৯,০০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা: এআই প্রযুক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্য


বিশ্বজুড়ে বড় আকারের কর্মী ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবে মাইক্রোসফট সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের মোট কর্মীবলের প্রায় ৪ শতাংশ হ্রাস করতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৯,০০০ কর্মী তাদের চাকরি হারাতে পারেন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানো এবং সংগঠনকে আরও দক্ষ ও খরচ-সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোসফটের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “বাজার পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের কোম্পানি ও টিমগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রাখতে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।” জানা যায়, কোম্পানির ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী বৈশ্বিক কর্মীসংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার, যার ভিত্তিতে এই ছাঁটাই করা হচ্ছে। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে মাইক্রোসফট প্রায় ৬,০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিল। এবারও ছাঁটাইয়ের মূল লক্ষ্য হিসেবে দেখানো হয়েছে ব্যবস্থাপনার স্তর হ্রাস এবং এআই প্রযুক্তিকে পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা এমন কর্মপরিবেশ তৈরি করতে চায় যেখানে কর্মীরা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আরও সৃজনশীল ও অর্থবহ কাজের সুযোগ পাবেন। মাইক্রোসফটের বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সব সময় আমাদের ব্যবসার কৌশলগত প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীবিন্যাসে পরিবর্তন এনেছি, এমনকি ভালো সময়েও।” বিশ্লেষকরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির আবির্ভাবের পর থেকেই মাইক্রোসফট দ্রুততার সঙ্গে এআই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ওপেনএআই-এর সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বহু পণ্যে এআই সংযুক্ত করেছে, যার জন্য প্রচুর অবকাঠামোগত ব্যয় হয়েছে। এই ব্যয় সামাল দিতে এবং ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিষ্ঠানটি কর্মীসংখ্যা কমিয়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ছাঁটাইকৃত কর্মীদের জন্য সেভারেন্স প্যাকেজ, স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা ও নতুন কর্মসংস্থানের জন্য পরামর্শ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্ত কেবল এককভাবে তাদের নিজেদের জন্য নয়, বরং এটি বিশ্ব প্রযুক্তি খাতে চলমান বড় পরিবর্তনেরই একটি অংশ। এআই, অটোমেশন এবং খরচ নিয়ন্ত্রণ—এই তিনটি মূল উদ্দেশ্য সামনে রেখে আজকের প্রযুক্তি জগৎ পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে। গুগল, মেটা ও অ্যামাজনের মতো অন্যান্য বড় কোম্পানিও ইতিমধ্যে একই ধরনের ছাঁটাই ও পুনর্গঠনের পথে এগিয়েছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.