Thursday, July 17, 2025

৫০ হাজার টাকা দাও, বিষয়টা আমি দেখছি’, জামায়াত নেতার অডিও ফাঁস


কুড়িগ্রামে মামলা থেকে রক্ষা করার নামে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড কালবেলা প্রতিনিধির হাতে এসেছে।

অভিযুক্ত জামায়াত নেতার নাম আনিসুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজিবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাবু মিয়া জানান, ২০১৩ সালে রাজিবপুরে জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আনিসুর। অভিযোগে তিনি বলেন, জামায়াত নেতা আনিসুর রহমান নিজেকে থানা অফিসারের (ওসি) ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে তাকে ভয় দেখান এবং মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা চান। অডিও ক্লিপে আনিসুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘বাবু শোনো, তোমার বিষয়ে আমাকে ফোন দিয়েছিল অফিসার। আমি বলছি, ও আমার ছোট ভাই, বিষয়টা আমি দেখব। তুমি আমার সাথে জরুরি দেখা করো... তোমার যদি একটা পশমের ক্ষতি হয়, আমি রাজিবপুরে দ্বিতীয় দিন মুখ দেখাব না।’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘তুমি আমার মোটরসাইকেলে ঘুরবা। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই ইনশাআল্লাহ। তুমি ফ্রি থাকো। আলহামদুলিল্লাহ বলে দুই গ্লাস পানি খাও। তোমার ভাই আছে তোমার পাশে।’ ব্যবসায়ী বাবু মিয়া বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। দীর্ঘদিন ধরে রাজিবপুর বাজারে পার্টসের ব্যবসা করি। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ অভিযোগের বিষয়ে আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি তার কাছে কোনো টাকা চাইনি। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। অডিওটি এডিট করা।’ ২০১৩ সালের ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তখন সে মামলার আসামি হতে পারে না, কারণ ওই সময় তার বয়সই হয়নি। মামলা হয়েছে অনেক পরে।’ কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন ফারুকী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে অবগত আছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ‘আমি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমার সময়ে এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি এমন কিছু পাওয়া যায়, অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার দাবি করেছেন। বিষয়টি এখন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উভয় মহলের নজরে রয়েছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.