ঢাকা, ২৫ জুলাই ২০২৫ – আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট (আই-ইউনিট) গোপন ফোন রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালে তার সরকারের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন। একটি রেকর্ডিংয়ে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছি। এখন তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে।”
১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ শাসনের পর, রক্তক্ষয়ী আন্দোলন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের মধ্যে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তথ্যমতে, আন্দোলনে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত এবং ২০,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হন।
আই-ইউনিট ফোন রেকর্ডিংগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বিশ্লেষণ করে কোনো কারসাজি হয়েছে কি-না তা যাচাই করেছে এবং ভয়েস ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে ফোনালাপকারীদের শনাক্ত করেছে। জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (এনটিএমসি) ১৮ জুলাই ২০২৪-এ রেকর্ড করা একটি কলে হাসিনা তার একজন সহযোগীকে বলেন, “আমার নির্দেশ ইতোমধ্যেই দেয়া হয়ে গেছে। আমি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছি। এখন তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে। আমি এতদিন তাদের থামিয়ে রেখেছিলাম… আমি ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছিলাম।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের সাথে আরেকটি ফোনালাপে হাসিনা বিক্ষোভ দমনে হেলিকপ্টার ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “যেখানেই গ্যাদারিং দেখবে, সেখানে ওপর থেকে... এখন ওপর থেকে করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে কয়েকটা জায়গায় শুরু হয়ে গেছে। কিছু (বিক্ষোভকারী) সরে গেছে।”
নিরাপত্তা বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করলেও, ঢাকার পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাবির শরীফ আই-ইউনিটকে জানান, হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা আহত বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসা করেছেন, যাদের গুলির জখম ছিল অস্বাভাবিক।