Wednesday, July 16, 2025

গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত: এনসিপি নেতারা অবরুদ্ধ, ১৪৪ ধারা জারি, ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন


গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে পদযাত্রায় হামলার ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউস ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। একদল সশস্ত্র ব্যক্তি এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশের গাড়ি ঘিরে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এনসিপির নেতারা অন্য পথে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যখন রওনা দিয়েছি, তখন গ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমরা এখন একটি জায়গায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি। প্রশাসন বলেছিল পরিস্থিতি শান্ত, কিন্তু পুলিশ, প্রশাসন ও সেনাবাহিনী পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়।”

এর আগে, পৌরপার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, সাউন্ড বক্স, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এনসিপির নেতাকর্মীরা এই হামলার জন্য নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন। ঘটনাটি বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ঘটে, যা গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তবে হামলার পরও এনসিপির নেতারা মঞ্চে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুরের জবাব দেওয়া হবে।” মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “যদি বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব।”

দিনের শুরুতে ইউএনও’র গাড়িবহরে হামলা, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। নাশকতা ও হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী সাতজনকে আটক করেছে, তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট ও টুঙ্গিপাড়া সড়কে এপিসি মোতায়েন করা হয়েছে।

সমাবেশের মঞ্চে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং সংঘর্ষ শহরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে।

এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নামে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। গোপালগঞ্জ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থল ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই কর্মসূচির ঘোষণার পর থেকে উত্তেজনা শুরু হয়


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.