Monday, July 28, 2025

আগস্টের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সম্ভাবনা

ঢাকা, ২৮ জুলাই ২০২৫: গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির সঙ্গে মিল রেখে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে এই ঘোষণা দিতে পারেন।

সূত্রগুলো আরও জানায়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করবে। এ–সংক্রান্ত বার্তা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই ইসির কাছে পৌঁছানো হবে। এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণার বিষয়টি এখন অনেকটাই নিশ্চিত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ইতোমধ্যে জুলাই সনদের একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে। কমিশন ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ করবে। কিছু দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনের দাবি তুলেছে, যা বিএনপি সন্দেহের চোখে দেখছে। গত রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সোমবারের মধ্যে জুলাই সনদের খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। তিনি জানান, বড় ধরনের মৌলিক আপত্তি না উঠলে খসড়া নিয়ে আলোচনা হবে না। খসড়ায় ভূমিকা-পটভূমি এবং অঙ্গীকারের বিষয় থাকবে। জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে কোনো বাধা না হওয়ার জন্য সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আশ্বস্ত করতে চায়। **নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আলোচনা** গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কার ও বিচারে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে সরকারের দিক থেকে স্পষ্ট বার্তার অভাবে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কিছু দলের স্থানীয় নির্বাচন ও পিআর পদ্ধতির দাবি এই সন্দেহকে আরও বাড়িয়েছে। ২২ জুলাই থেকে তিন দফায় বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৬ জুলাই ১৪টি দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, তিনি আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা ও তারিখ ঘোষণা করবেন। এটাই আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল।” তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু না থাকলেও নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচালের অপচেষ্টার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। **দলগুলোর প্রতিক্রিয়া** বিএনপি নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যদি দুই–চার দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেন, আমরা খুশি হব। এটাই আমাদের দাবি।” তবে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা অপরিপক্ব হবে। সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নির্বাচনের পূর্বশর্ত। জুলাই সনদের আগে তারিখ ঘোষণা হলে তা জুলাইয়ের চেতনাকে অবজ্ঞা করবে।” জাতীয় নাগরিক পার্টির আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ চূড়ান্ত হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় আপত্তি নেই।
সরকার জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের বিষয়ে আশ্বস্ত করতে তৎপর রয়েছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.