শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের নতুন গ্রন্থ *অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য* প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “দেশে সুশাসন নিশ্চিত করা বছরের পর বছর ধরে কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নিশ্চিত করতে প্রতিপক্ষ শক্তির প্রয়োজন।”
সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “সুশাসন অনেক কঠিন। প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের ক্ষমতার ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নেই। এখানে সংস্কার না হলে যত সংস্কারই করা হোক, কোনো লাভ হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও সংস্কার দরকার।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মতো একটি দেশ শাসন করা কঠিন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হচ্ছে না। তবুও আমরা কিছু পদচিহ্ন রেখে যেতে চাই, যাতে পরবর্তী সরকার তা অনুসরণ করতে পারে।”
ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করে বলেন, “বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা তহবিলের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থ লুট করে বিদেশে চলে গেছেন। যদি কোনো ব্যাংকে ২০ হাজার কোটি টাকা আউটস্ট্যান্ডিং থাকে, তার মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকাই লুটপাট হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করতে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে। যদিও আইএমএফ প্রাথমিকভাবে এই চাহিদা ১৮ বিলিয়ন ডলার হিসেব করেছিল।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা সহজ নয়, ভবিষ্যতের জন্যও এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এটি এখনো ৭.৫ শতাংশ, যেখানে নরওয়ে ও সুইডেনে এই হার অনেক বেশি।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ বক্তব্য দেন— অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবির, লেখক ও বিশ্লেষক অলতাফ পারভেজ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অধ্যাপক আবু আহমেদ, গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ভুঁইয়া আসাদুজ্জামান এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল মজিদ।