Wednesday, July 9, 2025

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পারিবারিক কারণ দেখিয়েও রাজনৈতিক বিবেচনায় ছাত্রদল নেতার পুনঃভর্তি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মাস্টার্স পর্যায়ে ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালার বাইরে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আনোয়ার পারভেজসহ ছয়জন শিক্ষার্থী পুনঃভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিকূলতার কারণে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ‘বিশেষ বিবেচনায়’ এই ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করতে না পারলে পুনঃভর্তির কোনো সুযোগ নেই। তবে এই নিয়ম উপেক্ষা করে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ছয়জন শিক্ষার্থীকে নতুন করে ভর্তি করা হয়েছে। প্রশাসন জানায়, ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শিক্ষাজীবন শেষ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে। তবে ভর্তি হওয়া সবাই রাজনৈতিক কারণ দেখাননি; একজন শিক্ষার্থী পারিবারিক কারণ উল্লেখ করেছেন। এই শিক্ষার্থী হলেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ। সূত্র জানায়, আনোয়ার পারভেজ ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স শুরু করেন এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্সে ভর্তি হলেও কোর্স শেষ করতে পারেননি। তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে পুনঃভর্তির আবেদন করেন। বিভাগীয় সভায় আবেদনটি সুপারিশ করা হলেও অ্যাকাডেমিক শাখা তা নিয়মবহির্ভূত বলে উপাচার্যের দপ্তরে পাঠায়। প্রথমে উপাচার্য অনুমোদন দিলেও অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘনের কারণে তা স্থগিত হয়। পরে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনার পর একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশে সিন্ডিকেটে ভর্তি অনুমোদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার পারভেজের উল্লিখিত পারিবারিক সমস্যা বাস্তব নয়। রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগ থাকলেও তিনি নিয়মিত ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন এবং আওয়ামী আমলে ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত হলে থাকলেও পরে ক্যাম্পাসে চলাফেরা ও খেলাধুলায় অংশ নিতে দেখা গেছে। আনোয়ার পারভেজ বলেন, “গত বছর নভেম্বরে আমি আবেদন করি। উপাচার্য প্রথমে অনুমতি দেন, কিন্তু পরে তা স্থগিত হয়। সিন্ডিকেটে যাচাইয়ের পর ভর্তি অনুমোদিত হয়।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের দরকার নেই। একটি মহল আমাকে বিতর্কিত করতে চাইছে।” ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বলেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ভর্তি বিবেচনা করা হয়েছে। পারিবারিক বা অন্য কারণে ভর্তির সুযোগ নেই।” যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নজিবুল হক বলেন, “সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের, আমরা শুধু যাচাই করেছি।”

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.