জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সতর্ক করে বলেছেন, নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তিনি জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত কয়েকটি বিষয় গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা প্রস্তাব করেছিলাম, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, এটি গৃহীত হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধিসহ একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।”
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিল বিএনপি। এর পাশাপাশি, সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যাওয়ার শর্তও গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।”
তবে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, “নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি সংসদ ও জনগণের কাছে রয়েছে। কিন্তু যদি কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, ক্ষমতা না থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।” সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী করতে হবে, দুর্বল নয়।”
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে মৌলিক দ্বিমত থাকলে আলোচনা থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের অংশ। সালাহউদ্দিন বলেন, “সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন কেউ দাবি করেনি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর তা দিয়েই গণতন্ত্র এগিয়ে যায়।” তিনি আরও বলেন, “ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। বিএনপি অংশ না নিলে জাতীয় ঐকমত্য কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।”
বক্তব্য শেষে তিনি জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
**বিএনপির ওয়াকআউট**
সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান নিয়ে আলোচনায় বিএনপি অংশ নেয়নি। বেলা সাড়ে ১১টার পর কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ বিষয় উপস্থাপন করলে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তারা এই আলোচনায় অংশ নেবেন না।
আলী রীয়াজ পরে বলেন, “বিএনপি জানিয়েছে, তারা এই অংশে আলোচনায় থাকবে না। একটি দল অংশ না নিলে আলোচনা বন্ধ করা যাবে কি না, তা আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।”
আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।
Note For Readers:
The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules.
Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters.
The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.