থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত দ্বন্দ্ব আবারও উত্তপ্ত হয়েছে, যার কেন্দ্রে রয়েছে ‘এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গল’ নামে পরিচিত একটি অঞ্চল। এই অঞ্চলে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে। বন-জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় রয়েছে ঐতিহাসিক প্রেয়াহ বিহার মন্দির, যা দুই দেশের মধ্যে বিরোধের মূল কারণ।
কম্বোডিয়ার সঙ্গে থাইল্যান্ডের ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক সরকার এই সীমানা নির্ধারণ করলেও, থাইল্যান্ড পরে এই মানচিত্রের বিরোধিতা করে। তাদের দাবি, ১১শ শতকে নির্মিত প্রেয়াহ বিহার মন্দির তাদের ভূখণ্ডে থাকা উচিত। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এই মন্দির কম্বোডিয়ার বলে রায় দেয়। তবে, মন্দিরের আশপাশের এলাকা নিয়ে থাইল্যান্ডের আপত্তি অব্যাহত থাকে।
২০০৮ সালে ইউনেসকো প্রেয়াহ বিহারকে বিশ্ব ঐতিহ্য নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এবং এটিকে কম্বোডিয়ার অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে শুরু হয়, যা ২০১১ সালে চরম আকার ধারণ করে। ২০১৩ সালে আইসিজে আবারও কম্বোডিয়ার পক্ষে রায় দেয়, তবে সীমান্ত বিরোধ এখনও অমীমাংসিত।
দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য ২০০০ সালে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যৌথ সীমান্ত কমিশন (জেবিসি) গঠন করে। গত ১৪ জুন নমপেনে এই কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক হলেও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। থাইল্যান্ডের চাচোয়েংসাও প্রদেশে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর সড়কে থাই সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয়েছে, যা উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়।