আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানে রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শুক্রবার (১৩ জুন ২০২৫) ইসরায়েলের এই হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, এবং ছয়জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী রয়েছেন। এই হামলার পর ইরান পাল্টা প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এই অভিযানে তেহরান, নাতানজ, তাবরিজ, এবং ইস্পাহানের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাঁচ দফা হামলা চালিয়েছে। এই হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সামরিক সক্ষমতাকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে বলে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন। হামলায় ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এবং সামরিক ঘাঁটিগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে বলেন, “ইরানকে আমি একের পর এক সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু তারা চুক্তিতে আসেনি। এখনই সময়, আর কোনো রক্তপাত নয়। ইরানকে পারমাণবিক চুক্তিতে আসতে হবে, নইলে পরবর্তী হামলাগুলো আরও ভয়াবহ হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইরানের পারমাণবিক বোমা থাকতে পারে না। তারা যদি পারস্য সাম্রাজ্যের গৌরব রক্ষা করতে চায়, তবে এখনই আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে হবে।”
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “ইসরায়েল এই হামলার মাধ্যমে তাদের বর্বর স্বভাব প্রকাশ করেছে। তারা আমাদের আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষের জীবন নিয়েছে। এর জন্য তাদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।” ইরান ইতিমধ্যে ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছে।
এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংঘাতের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল না, তবে ইসরায়েলের উপর পাল্টা হামলা হলে তারা প্রতিরক্ষামূলক সহায়তা দেবে।
এ.আই/এম.আর