ঢাকা, ৬ জুন ২০২৫ – ঈদুল আজহার আর মাত্র এক রাত বাকি। রাজধানী ঢাকায় চলছে কোরবানির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কোরবানির পশু কেনা। শুক্রবার সকাল থেকে গাবতলী, তেজগাঁও, শাহজাহানপুর, শনিরআখড়া ও বাসাবোর মতো বিভিন্ন হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কিন্তু অনেক ক্রেতাই হাটে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন, কারণ তাদের পছন্দের ছোট ও মাঝারি গরু পাওয়া যাচ্ছে না।
ঢাকা পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। সকাল গড়াতেই অনেক হাটে এই সাইজের গরুর স্টলগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। ফলে ক্রেতারা হতাশ হয়ে ফিরছেন। যেসব গরু পাওয়া যাচ্ছে, তাদের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বাজেটের চেয়ে কিছুটা বেশি দাম হলেও পছন্দের গরু পেলে অনেকে কিনে নিচ্ছেন।
গাবতলী হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট ও মাঝারি গরুর স্টলগুলো ধীরে ধীরে খালি হয়ে যাচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সকালের মধ্যেই বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে গরু এলেও দাম বেশি হওয়ায় সব শ্রেণির ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই।
মগবাজারের নাইমুল ইসলাম বলেন, “আমার বাজেট ৯০ হাজার টাকা। গত বছর এই বাজেটে মাঝারি সাইজের ভালো গরু পেয়েছিলাম। এবার শাহজাহানপুর হাটে খুঁজে না পেয়ে গাবতলীতে এসেছি, এখানেও ছোট বা মাঝারি গরু প্রায় নেই।”
রামপুরার ইমদাদুল হক বলেন, “বাজারে বড় গরুর অভাব নেই, কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের পক্ষে এগুলো কেনা সম্ভব নয়। যেটা কিনতে এসেছি, সেটাই পাচ্ছি না।”
হাটে বড় গরুর সংখ্যা বেশি হলেও এগুলোর প্রতি সাধারণ ক্রেতাদের আগ্রহ কম। অনেক গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা, কোথাও কোথাও তারও বেশি। তবে এই দামে আগ্রহী ক্রেতা খুবই কম।
ময়মনসিংহের খামারি আবু রায়হান বলেন, “তিন বছর ধরে বড় গরুটা লালন-পালন করেছি। খাওয়া, চিকিৎসা—সব মিলিয়ে খরচ অনেক। এখন হাটে এনে দাম না পেলে ভবিষ্যতে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।”
শেষ মুহূর্তে কিছু বিক্রেতা সামান্য ছাড় দিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ ভালো দামের আশায় অপেক্ষা করছেন। হাটে দরদাম, হাকডাক আর হতাশার মধ্য দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা সময় পার করছেন। অনেক ক্রেতা পছন্দের গরু না পেয়ে এক হাট থেকে আরেক হাটে ছুটছেন।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখনও গরু আসছে। তবে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। কিছু গরু ট্রাকের মাধ্যমে এক হাট থেকে আরেক হাটে পাঠানো হচ্ছে, যাতে চাহিদা পূরণ করা যায়।
ঈদের সময় ঘনিয়ে আসায় ক্রেতারা এখন ‘যা পাচ্ছি তাই’ মানসিকতায় কিনছেন। কেউ কেউ দাম বেশি হলেও পছন্দের গরু কিনে নিচ্ছেন, আবার কেউ বলছেন, দরদাম করেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।
এ.আই/এম.আর