Sunday, June 29, 2025

পরমাণু শক্তি কমিশনে আন্দোলন: স্বায়ত্তশাসন ও দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ, নিউক্লীয় তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদ অবনমন বন্ধ এবং গবেষণার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ছয় মাস পার হলেও সরকারের কোনো নজর নেই। দুইবার মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনো সুখবর মেলেনি। উল্টো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়েছে, যা ৫২ বছরের ইতিহাসে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য অমর্যাদাকর। এতে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

কর্মকর্তাদের অভিযোগ, কমিশনের শীর্ষ পদগুলো শূন্য রেখে এবং মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ববাদী আচরণের মাধ্যমে কমিশনকে দুর্বল করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ কমিশনের স্বায়ত্তশাসন, কর্মকর্তাদের মনোবল ও গবেষণা কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারলে গবেষণার ফলাফল মানসম্পন্ন হবে না বলে মনে করেন তারা।

পরমাণু শক্তি কমিশনের আওতায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই কার্যক্রমের জন্য যৌক্তিক বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে জুলাই থেকে নতুন করে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘ, পরমাণু শক্তি কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতি।
**১১ দফা দাবি:**
১. কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শূন্য পদে দ্রুত স্থায়ী নিয়োগ।
২. মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ববাদী আচরণ বন্ধ করে স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
৩. উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি ও মনোনয়নের এখতিয়ার কমিশনে ফিরিয়ে দেওয়া।
৪. নিউক্লীয় তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিশ্চিতকরণ।
৫. আইবিএএস সিস্টেমের বাইরে রেখে বাপশক আইন ২০১৭ অনুযায়ী তহবিল ব্যবস্থাপনা।
৬. আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ।
৭. অপ্রাসঙ্গিক তথ্য চেয়ে হয়রানি বন্ধ।
৮. অবনমনকৃত পদগুলো নির্ধারিত গ্রেডে উন্নীতকরণ।
৯. প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের গ্রেড-২ ও গ্রেড-১ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।
১০. এনপিসিবিএল ও পিডিবির মধ্যে পিপিএ সম্পন্নের সিদ্ধান্ত বাতিল।
১১. অস্থায়ী পদ স্থায়ীকরণ, নতুন পদ সৃজন, গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ বন্ধ।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, “আন্দোলনের কারণে মন্ত্রণালয় অর্থছাড় বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে ২৫০০ কর্মচারী ঈদের আগে বেতন-ভাতা পায়নি। গবেষণার জন্য বরাদ্দ অপ্রতুল। সরকারের কোনো নজর নেই।”

পরমাণু শক্তি কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল আরেফিন বলেন, “আমরা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান চাই, যাতে গবেষণায় বাধা না আসে। মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।” বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.