জামালপুর, ১৫ জুন ২০২৫ : জামালপুরের ইসলামপুর রেলস্টেশন থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা ট্রেনে সিট না পেয়ে প্রচণ্ড গরমে উত্তপ্ত ছাদে চড়ে ঢাকায় ফিরছেন। ঈদুল আজহার ছুটি শেষে আজ থেকে অফিস খোলায়, সিট না পেলেও যাত্রীদের ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে তারা ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের ঝুঁকি নিচ্ছেন।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটি প্রতিদিন দুপুরে দেওয়ানগঞ্জ থেকে ইসলামপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। গত দুই দিন ধরে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সিটের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি, ফলে প্রচণ্ড রোদেও যাত্রীরা ছাদে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের মতো ইন্টারসিটি ট্রেনের টিকিট সরকার শতভাগ অনলাইনে দিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ যাত্রীর অনলাইনে টিকিট কাটার দক্ষতা না থাকায় তারা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। মিনিটের মধ্যে টিকিট শেষ হয়ে যায় এবং কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। ইসলামপুর থেকে ঢাকার শোভন চেয়ারের টিকিটের মূল্য ২৫০ টাকা, কিন্তু কালোবাজারে তা ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যাত্রীরা জানান, ঈদের বেতন ও বোনাস বাজারে খরচ হয়ে গেছে, তাই বেসরকারি ট্রেনে স্বল্পমূল্যে দুটি টিকিটে একটি সিট পাওয়া গেলেও, সিট না পেয়ে ছাদে উঠতে হচ্ছে।
দূরদূরান্ত থেকে আসা দিনমজুররা জানান, অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় ট্রেনের ভাড়া কম, তাই কষ্ট হলেও তারা ছাদে চড়ে যাত্রা করছেন। পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার যাত্রীরা বলেন, “ছাদ এত গরম যে ডিম দিলে ভাজা হয়ে যাবে। ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা আমরা কীভাবে থাকব? আল্লাহর ওপর ভরসা করে রওনা দিয়েছি।”
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, “এই গরমে ছাদে ঢাকা যাওয়ার কথা ভাবলে অবাক লাগে। মানুষ নিরুপায়, কিন্তু বেসরকারি ট্রেন হওয়ায় আমাদের কিছু করার নেই।”
ইসলামপুর কমিউটার ট্রেন কর্তৃপক্ষ জানান, তাদের ট্রেনের আসন সংখ্যা সীমিত। শনিবার প্রায় ৫ হাজার যাত্রী ঢাকায় গেছেন, আজও তেমন ভিড় হবে। এত যাত্রীকে সিট দেওয়া সম্ভব নয়। তারা এই রুটে আরও দুটি ট্রেন চালুর অনুরোধ করেন।
ইসলামপুর স্টেশন মাস্টার মো. শাহীন মিয়া বলেন, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী চারটি ট্রেনে মোট ৪০০ আসন থাকলেও যাত্রী ৮ থেকে ১০ হাজার। এত যাত্রীকে সিট দেওয়া সম্ভব নয়, তাই তারা ছাদে উঠছেন। প্রচণ্ড গরমে যেখানে ঘরে থাকা কঠিন, সেখানে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হচ্ছেন।
এ.আই/এম.আর