ঢাকা, ১০ জুন ২০২৫: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের সিনিয়র নেতাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বা সরকারের সঙ্গে সরাসরি বিরোধে না জড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের বিষয়ে সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনা করে সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গত শনিবার (৭ জুন) রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানাতে আসা স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এই নির্দেশনা দেন। সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়া দুজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবির মধ্যে গত শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ঘোষণা দেন যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নতুন রোডম্যাপ নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতামত উঠে আসে। পরে স্থায়ী কমিটির বিবৃতিতে এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
শনিবার গুলশানের ফিরোজায় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
সূত্র জানায়, শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সরকারের নতুন নির্বাচন রোডম্যাপের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। খালেদা জিয়া এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন নিয়ে আবহাওয়ার সংকট, রমজানসহ বিভিন্ন কারণে সংশয় প্রকাশ করেন। তবে তিনি সরাসরি সরকারের সঙ্গে বিরোধে না জড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “সরকারের সঙ্গে সংঘাতে গেলে বিএনপির কোনো লাভ নেই। বিরোধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করাই শ্রেয়। ড. ইউনূস না থাকলে কী হবে, তাও ভাবতে হবে। নির্বাচনের রোডম্যাপ এগিয়ে নিতে যুক্তির আলোকে আলোচনা করতে হবে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাক্ষাতের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হালিম ও আফরোজা খানম রিতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
খালেদা জিয়ার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার (৯ জুন) স্থায়ী কমিটির আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তার পরামর্শের ওপর বিশদ আলোচনা হয় এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির কঠোর অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয় অবস্থানে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এ.আই/এম.আর