আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ঢাকা, ৫ জুন ২০২৫:
পবিত্র ঈদুল আজহার আগের দিনেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকে আটকা পড়ে আছেন, যার ফলে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় যখন ঈদের আনন্দে মেতে উঠতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজার বাসিন্দারা ইসরায়েলি আক্রমণের কারণে মৃত্যু ও শোকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এ পর্যন্ত ৫৪,৬০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২৫,৩৪১ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী গত ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় গাজায় তীব্র হামলা শুরু করে, যা জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গের পর আরও নৃশংস রূপ নিয়েছে। গাজার রাফাহ ও খান ইউনিসের মতো এলাকাগুলোতে ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হচ্ছে, যেখানে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ রাফাহকে ‘হতাশার প্রেসার কুকার’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন, এবং উদ্ধারকারীরা নিরাপত্তার অভাবে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।” এছাড়া, ইসরায়েলি বাধার কারণে গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলো এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলের এই আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। গাজার বাসিন্দারা এখন ঈদের নামাজ বা উৎসব উদযাপনের পরিবর্তে প্রিয়জনদের জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।