আর্ন্তজাতিক ডেস্ক, ০৯ জুন ২০২৫ : ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী এসমাইল খাতিব জানিয়েছেন, ইসরায়েলের গোপন ও স্পর্শকাতর নথিপত্র শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। তিনি এই নথিগুলোকে ‘অমূল্য সম্পদ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, এগুলো ইরানের আক্রমণাত্মক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রমাণ পেশ করেননি।
রোববার (৮ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খাতিব দাবি করেন, তেহরানের হাতে হাজার হাজার গোপন নথি রয়েছে, যার মধ্যে ইসরায়েলের পারমাণবিক স্থাপনা, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তেলআবিবের সম্পর্কসংক্রান্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত।
ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশাল তথ্যভাণ্ডারের দখল নিয়েছে। তবে এই দাবির সমর্থনে কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। খাতিব বলেন, নথি হস্তান্তর একটি দীর্ঘমেয়াদি ও কঠোর নিরাপত্তা-নির্ভর প্রক্রিয়ার ফল। হস্তান্তরের পদ্ধতি গোপন থাকবে, তবে নথিগুলো শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
ইসরায়েল এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। এই তথাকথিত তথ্য ফাঁস ২০২৩ সালে ইসরায়েলের একটি পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে সাইবার হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, তা স্পষ্ট নয়।
২০১৮ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছিলেন, মোসাদের অভিযানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত বিশাল আর্কাইভ উদ্ধার করা হয়েছে, যা ইরানের ব্যাপক পারমাণবিক কার্যক্রমের প্রমাণ বহন করে।
ইরানের এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা স্থবির। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটি ইরানের স্বার্থের পরিপন্থী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছেন। এপ্রিলে তিনি ইসরায়েলের পরিকল্পিত হামলা ঠেকাতে হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করছে, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার কাছাকাছি ইউরেনিয়াম পরিশোধন করছে। তবে ইরান দাবি করে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আইএইএ-এর বোর্ড অব গভর্নরস এ সপ্তাহে ইরানকে তিরস্কার করতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা উত্তেজনার মধ্যে ইরানের এই ঘোষণা নতুন কূটনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে নথিগুলোর প্রকৃতি ও প্রমাণযোগ্যতা এখনো অস্পষ্ট।
এ.আই/এম.আর